দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার বাংলাবাজার টু ভমভমি বাজারের প্রায় দুই কিলো মিটার রাস্তায় আরসিসি ঢালাই কাজে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন কাজ ফেলে রেখে নানা অজুহাতে কাজ না করে বর্ষার আগ মুহুর্তে নিম্ন মানের মাটি মিশ্রিত বালি ও পাথর দিয়ে কাজ করছে মিলন-নুরুল জেবী নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। স্থানীয়দের অভিযোগ উন্নয়ন কাজে সরকারি টাকা আত্মসাতের নামে হরিলুট হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মনির উদ্দিন সহ স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিতিতে সরেজমিনে জানা যায়, উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের বাংলাবাজার টু ভমভমি বাজার রাস্তায় ৩ কোটি ২৩ লক্ষ ৮ হাজার ১৬৮ টাকা ব্যায়ে ২০১৯ ইং সালের শেষ দিকে দুই কিলো মিটার রাস্তার দুই পাশে গার্ড ওয়াল, ইট সলিং, আরসিসি ঢালাই কাজ পায় মিলন-নুরুল জেবী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর পর থেকেই মিলন-নুরুল জেবী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কচ্ছপ গতিতে কাজ শুরু করে। কাজের মেয়াদের এক বছরেও শেষ করতে পারেনি ৫০ ভাগ কাজও। কাজের মেয়াদ ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে শেষ করার কথা থাকলেও দ্বিতীয় মেয়াদে কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে শেষ করতে পারছে না সুনামগঞ্জের এ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা ও সার্বিক তদারকীতে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
স্থানীয়দের অভিযোগ ঠিকাদারের লোকজন মাটি মিশ্রিত পাথর ও বালি দিয়ে পাথর না ধুয়ে ঢালাই কাজ করছে। ঢালাই কাজের পূর্বে ইট বসানোর কথা থাকলেও দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি ফাঁক ফাঁক করে ইট বসানো হয়েছে। মাটি মিশ্রিত পাথর না ধুয়ে এবং ঢালাই কাজে মরিচা ধরা রড ব্যবহারের অভিযোগও পাওয়া গেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. মনির উদ্দিন বলেন, বাংলা বাজার টু ভমভমি রাস্তায় মাটি মিশ্রিত পাথর ও বালি দিয়ে, মারিচা ধরা রড এবং ইট দুই থেকে আড়াই ইঞ্চি ফাঁক ফাঁক করে বসিয়ে ঢালাই কাজ শুরু করেছে ঠিকাদার। নি¤œ মানের কাজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেও কোন লাভ হয়নি। সরকারের উন্নয়ন বরাদ্দ উন্নয়নের জন্য, কিন্তু কাজের নামে হরিলুট করছে এই প্রভাবশালী ঠিকাদার।
ঠিকাদার মো. আনোয়ারুল হক বলেন, মাটি মিশ্রিত বালি ও পাথরের ব্যবহার করছি না। তবে পাথরের সাথে সামান্য ডাস্ট রয়েছে। তবে ঠিকাদারকে মাটি মিশ্রিত পাথর দেখালে তিনি কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। রাস্তার ঢালাই এর নীচে শ্রমিকরা ইট বসাতে সময় ভুল করে ফাঁক ফাঁক করে বসিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী দেখেছেন ইট পুনরায় তোলে নতুন করে বসানোর কথা বলেছেন। আমি সেই মতো কাজ করব।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল নুর তারেক জানান, বাংলা বাজার টু ভমভমি বাজার রাস্তাটি আমি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। রাস্তার কাজের ত্রæটিপূর্ণ অংশের কাজ বন্ধ করেছি। ঠিকাদার নিয়মানুযায়ী কাজটি বাস্তবায়ন করতে হবে। আরসিসি ঢালাই কাজের নীচে কোন ভাবেই ইট ফাঁক ফাঁক করে বসানো যাবে না। মাটি মিশ্রিত পাথর ও বালি ব্যবহার করা যাবে না। পাথরে মাটি থাকলেও অবশ্যই পাথর ধুয়ে ব্যবহার করতে হবে।
Development by: webnewsdesign.com