মাছ পৃথিবীর অন্যতম সুস্বাদু খাবার। মহান আল্লাহ সৃষ্টিগতভাবে এই মাছের ব্যবস্থা করেছেন। অন্যান্য হালাল প্রাণী ভক্ষণ বৈধ হওয়ার জন্য অবশ্যই তা আল্লাহর নামে জবাই করা জরুরি। কিন্তু মাছ জবাই করতে হয় না। এর কারণ হলো, সেটার মূল গঠনের ভিত্তি হলো পানি। পানি স্বভাবগতভাবে পবিত্র এবং অন্যকে পবিত্রকারী।
সুতরাং যেভাবে নাপাকি পানির মাঝে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না, তেমনি পানির প্রাণীর রুহ পৃথক হলে তাতে নাপাকের প্রভাব বিস্তার করে না এবং জবাই করার প্রয়োজন হয় না। আর পঙ্গপাল জবাই না করার কারণ হলো তাতে প্রবাহিত রক্ত থাকে না। এর শরীরের সঙ্গে রুহের সম্পর্ক রয়েছে রক্ত ব্যতীত, যেমন—পাহাড়-পর্বত ও গাছপালার সম্পর্ক সেটার রুহের সঙ্গে। এজাতীয় বিষয়গুলোর রুহ পৃথক হওয়া নাপাককে আবশ্যক করে না।
কেননা এজাতীয় রুহ পৃথক হওয়ার কারণে রক্ত শোষণ হয় না। এ বিষয়ের সঙ্গে সামুদ্রিক সব প্রাণী এবং জমিনে বসবাসকারী প্রাণী ও পোকামাকড় সবই অন্তর্ভুক্ত; কিন্তু স্থলে বসবাসকারী এসব প্রাণী সত্তাগতভাবে ইতর প্রজাতির হয়ে থাকে এবং সেগুলো অপবিত্র খাদ্য আহার করার কারণে ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হওয়ার দরুন হারাম সাব্যস্ত হয়েছে। পক্ষান্তরে মাছ ও পঙ্গপাল সত্তাগতভাবে নাপাক থেকে মুক্ত। এ জন্যই এ দুটিকে বিশেষভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে।
তাইতো রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—‘আমাদের জন্য দুটি মৃত জন্তু ও দুটি রক্ত হালাল করা হয়েছে। দুটি মৃত জন্তু হলো মাছ ও পঙ্গপাল আর দুটি রক্ত হলো, কলিজা ও গুর্দা।’ (মুসনাদে আহমাদ, ইবনে মাজাহ)
কলিজা ও গুর্দা দুটি ভিন্ন অঙ্গ। কিন্তু দুটিই রক্তের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। এ জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) এ সন্দেহকে দূর করে দিয়েছেন। পঙ্গপাল মাছের মতোই, তার মাঝে প্রবাহিত রক্ত নেই। তাই তা জবাই করার প্রয়োজন নেই।
Development by: webnewsdesign.com