ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়কে দুর্ঘটনায় মা হারানো দেড় বছরের শিশু জায়েদের নিঃসন্তান দম্পতির পরিবারে ঠাঁয় হল

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪ | ১:২৭ অপরাহ্ণ

ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়কে দুর্ঘটনায় মা হারানো দেড় বছরের  শিশু জায়েদের নিঃসন্তান দম্পতির পরিবারে ঠাঁয় হল
apps

ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়কে দুর্ঘটনায় মা হারানো দেড় বছরের জায়েদ হাসানকে উচ্চবিত্ত ও নিঃসন্তান দম্পতির পরিবারে দত্তক দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২০ মে) সন্ধ্যায় ওই দম্পতির পরিচয় গোপন রেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে শিশু জায়েদকে হস্তান্তর করে শিশু কল্যাণ বোর্ড। জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাইয়ুম এ তথ‍্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রোববার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় শিশু জায়েদকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে ১০টি আবেদন জমা পড়ে। পরে আবেদনকারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক মর্যাদার দিক গুরুত্ব দিয়ে দুইটি আবেদন বিবেচনায় রাখা হয়। তবে শিশু জায়েদের বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা থাকায় সোমবার রাতে আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে শিশুটিকে নিঃসন্তান সচ্ছল পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তিনি আরও বলেন, আদালত প্রথমে শিশুটিকে তার মামা রবিন মিয়ার কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশনা দিয়েছিল। তবে মামা রবিন মিয়ার আর্থিক সংকট রয়েছে। তিনি একজন ভ্যানচালক। তার আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। এ কারণে তিনি সুন্দর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জায়েদকে নিজের কাছে রাখতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে লিখিতভাবে অনাপত্তিপত্র দিয়েছেন। এরপর শিশু কল্যাণ বোর্ডের আহ্বানে দশটি পরিবার জায়েদকে দত্তক নিতে আবেদন করেছিল। শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার বিষয়ে শিশুটির মামা রবিন মিয়া বলেন, জাহিদের সুন্দর ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি চাই আল্লাহ তাকে ভালো রাখুন।

সূত্রমতে, গত ৯ মে রাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন জায়েদা খাতুন (৩০) ও তার দেড় বছর বয়সী শিশুপুত্র জায়েদ হাসান। সেখানে গত ১০ মে রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জায়েদা। তবে তখনও জায়েদার পরিচয় পাওয়া যায়নি। জায়েদার মৃত্যুর পর হাসপাতালের বিছানায় দেড় বছরের স্বজনহীন অজ্ঞাত শিশুর কান্নাকাটি ও চিৎকারের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমন খবর জানতে পেরে গত ১১ মে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান নিহত জায়েদার ভাই রবিন মিয়া।
পরে রবিন মিয়া ওইদিন বোনের মরদেহ বুঝে পেলেও শিশুটি সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। কিন্তু হাসপাতালে এসে রবিন মিয়া শিশুটিকে লালন পালন করতে প্রথমে সম্মতি জানালেও পরে তিনি অসম্মতি জানান। এরপর জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্তক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

Development by: webnewsdesign.com