ভুল তথ্য ও ধারণার উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পাট সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক প্রবীণ শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী।
শনিবার (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বন্ধকৃত রাষ্ট্রায়ত্ব পাটশিল্পের বিরাজমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
প্রবীণ শ্রমিক নেতা সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে পাট ও পাট পণ্যের চাহিদা রয়েছে এবং এই চাহিদা উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঠিক তখনই সরকার রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলো বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ দেখানো হয়েছে, তার বেশিরভাগই ভুল তথ্য ও ধারণার উপর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পাট শুধু সম্পদ নয়, বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির অংশ। পাট ও পাট শিল্প ধ্বংস হওয়ার অর্থ- বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম উপাদানকে ধ্বংস করে দেয়া। ভুল নীতি ও দুর্নীতি পরিহার করে যদি সঠিক নীতি, পদ্ধতি ও কর্মপন্থা ঠিক করতে পারলে দেশের পাটগুলোকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা সম্ভব।
২০১০ সালে প্রবর্তিত মোড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন হলে, দেশের ভেতরেই পাটপণ্যের বিপুল চাহিদা সৃষ্টি হবে। রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকলগুলোতে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি শত বছরের পুরানো। পুরানো যন্ত্রপাতির পরিবর্তে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির যন্ত্রপাতির সংযোজন করে, শ্রমিকদের কারিগরি দক্ষতা বাড়িয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল চালু করতে হবে। নতুন টেকনোলজি ব্যবহারের ফলে গড় উৎপাদন ৬০ ভাগ বেড়ে যাবে।’
সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক সহিদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর পাট শিল্পের মাধ্যমেই সোনালি আঁশর দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে পরিচিতি পেয়েছিল। পাট শিল্প শুধু অর্থনীতিই নয়, এটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। এ রকম একটি শিল্প আমাদের চোখের সামনে ধ্বংস হয়ে যাবে, তা হতে দেওয়া যায় না।
পাট চাষ, প্রক্রিয়াকরণ, পাট ও পাট জাতীয় বিভিন্ন উপকরণ তৈরি ও বাণিজ্যের সাথে প্রায় ৪ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ব পাটকল বন্ধ ঘোষণা করায় স্থায়ী, বদলি ও ক্যাজুয়াল সবমিলিয়ে প্রায় ৫১ হাজার পাটকল শ্রমিক বেকার হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল, পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় পাটকল চালু করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাট-সুতা ও বস্ত্রকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল আহসান, আসলাম খান, শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মছিউদদ্দৌলা, হাফিজ জুট মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, আমিন জুট মিলস শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মোস্তফা, আমিন পাটকল শ্রমিক-কর্মচারি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, এশিয়াটিক কটন মিলস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আলী প্রমুখ।
Development by: webnewsdesign.com