মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর দরজায় কড়া নাড়ছে। আর মাত্র কয়েক দিন পরেই ঈদুল ফিতর পালিত হবে। এই আনন্দকে পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে নতুন পোশাক অবশ্যই দরকার।
তাই নতুন পোশাক নিতে ভিড় করছে শহরের বিভিন্ন বিপনি-বিতান গুলোতে। জমে উঠেছে দিনাজপুরের দক্ষিণে সীমান্ত এলাকা হিলির ঈদ মার্কেট। ছোট ছোট বিপণিবিতানগুলোতে নতুন ডিজাইনের বাহারি পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
নতুন পোশাকে ঈদ কাটবে, এমন প্রত্যাশায় দিনের গরমকে উপেক্ষা করে ক্রেতারা আসছেন তাদের পছন্দের পোশাক কিনতে। যাদের কাপড় কেনাকাটা শেষ তারা ছুটছে জুতার দোকানে। প্রসাধনী বা কসমেটিকস এর দোকানে বিভিন্ন বয়সের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।
রবিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে সাপ্তাহিক হাট বারের দিনে হিলি বাজারের বৃষ্টি, মা, দূর্গা, জননী গার্মেন্টস ও লাবণ্য ফ্যাশনসহ বিভিন্ন ছোট বড় দোকানে গিয়ে উপচে পড়া মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
হিলি মূলত ভারত সীমান্তবর্তী একটি শহর। ফলে এখানকার দোকানগুলোতে পাশ্ববর্তী দেশ থেকে আনা পোশাক, কসমেটিকসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে আসানে দেশের বিভিন্ন স্থানের ক্রেতারা।
জানা গেছে, ক্রেতাদের আকর্ষণ করতে প্রতিটি দোকানে নানান ডিজাইনের কাপড় সাজিয়ে এবং জুলিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। এসব দোকানে নারী পুরুষ ও তরুণীদের জন্য রঙ-বেরঙের থ্রি-পিস, শাড়ি, ওয়ান পিচ, ল্যাহাঙ্গা পাওয়া যাচ্ছে। পুরুষদের জন্য রয়েছে শার্ট, প্যান্ট, পাঞ্জাবি ও লুঙ্গী। ছোটদের জন্য পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক। এদিকে জুতা ও কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ক্রেতা সমাগম চোখে পড়ার মতো।
প্রাণঘাতী করোনার কারণে গত দুই বছর মানুষ ঈদের আনন্দ উপভোগ কিংবা ভাগাভাগি করতে পারেনি আপনজনদের সঙ্গে। শান্তিপূর্ণ ভাবে সবাই ঈদের কেনাকাটা করছে। নতুন পোশাকে ঈদগাহে যাবে মুসলিম, করবে এবার একে অপরকে আলিঙ্গন।
হিলি বাজারে ঈদের কেনা-কাটা করতে আসা কয়েক জন ক্রেতা বলেন, বাড়ির জন্য মার্কেট করতে এসেছি। এবার ঈদটা অনেক ভাল এবং আনন্দের হবে আশা করছি। পরিবারের সবার জন্য পোশাক কিনছি। প্রায় দোকানে বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় দেখা যাচ্ছে। পছন্দ মতো কেনা-কাটা করছি, তবে দামটা একটু বেশি।
হিলি বাজারের দোকান কর্মচারী আবু সায়েম ও সাইদুর রহমান বলেন, গত দুই বছর করোনার কারণে মহাজনরা তেমন ব্যবসা করতে পারেনি। তাই আমরা ভাল ভাবে বেতন-ভাতা পাইনি। এবার করোনা নাই, দোকানে অনেক ক্রেতারা আসছে, বেচা-বিক্রিও বেশি, আশা করি ঈদও আমাদের ভাল হবে।
দোকান মালিক ইলিয়াস আলী খান ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, করোনা কাটিয়ে একটু সুদিন ফিরে এসেছে। আর কয়েকদিন পর পবিত্র ইদুল ফিতর। বেচা-বিক্রি অনেকটায় বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদ উপলক্ষে অনেক পোশাক দোকানে তুলেছি। ক্রেতারা আসছে, বিক্রিও হচ্ছে। আশা করছি বাঁকি দিনগুলোতে বিক্রি আরও বাড়বে।
হাকিমপুর (হিলি) পৌর মেয়র জামিল হোসেন চলন্ত বলেন, ঈদের আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ইতোমধ্যে দোকান গুলোতে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তার জন্য আমি পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। যাতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাশার শামীম, যেহেতু এই শহরটি (হিলি) সীমান্তবর্তী এলাকা তাই এখানে বাড়তি নিরাপত্তার প্রয়োজন। মার্কেটগুলোতে পোশাকে এবং সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা টহল দিচ্ছে। এছাড়াও সন্ধ্যার শহর থেকে গ্রাম গঞ্জে যাওয়ার বিভিন্ন সড়কে পুলিশের আলাদা ডিউটির ব্যবস্হা করা হয়েছে। আশা করি কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
Development by: webnewsdesign.com