বিতর্কিত মেয়র আব্বাসের অবৈধ দুইতলা ভবন গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন

শনিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ | ৩:২৯ অপরাহ্ণ

বিতর্কিত মেয়র আব্বাসের অবৈধ দুইতলা ভবন গুড়িয়ে দিলো প্রশাসন
apps

রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভায় সরকারি খাল দখল করে মেয়র আব্বাস আলীর নির্মাণাধীন দুই ভবন ভেঙে গুড়িয়ে গুড়িয়ে দিল স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার সকাল ৯টায় ভুল্ডুজার দিয়ে ভবন ভাঙা শুরু করা হয়।

ভবন দুইটি ভাঙায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে এটা উচ্ছেদে তারা চিঠি পেয়েছিলেন। পরে তারা মেয়রকে ৩০ দিন আগে উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। এর পর এটি আইন অনুযায়ী ভাঙা হচ্ছে।

দুই তলার এই মার্কেটটি ভাঙা দেখতে স্থানীয় উৎসুক জনতা ভির জমায়।

পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শেখ এহসান উদ্দীন জানান, সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য এই অভিযান চালানো হচ্ছে। পবা উপজেলার কাটাখালী বাজার সংলগ্ন ১৯১ নং সমসাদীপুর মৌজার ৮২৩ ও ৯৬০ নং আরএস দাগের নালা শ্রেণির ১.৪২ ও ০.৯ একর জমি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত। নালিশী খাল হতে ইতিপূর্বে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করে বিএমডিএ পবা জোন কর্তৃক আর.সি.সি ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। ড্রেনের উপর নির্মাণাধীন ভবন করা হচ্ছে। ভবনটি উচ্ছেদের জন্য গত ২৫ আগস্ট নোটিশ প্রদান করা হয়। নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্ছেদ না করায় শনিবার স্থানীয় সরকারের জায়গা দখল মুক্ত করা হলো।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপের জন্য চিঠি দেয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ।

বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিটিতে বলা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর পত্রিকার সংবাদ প্রকাশের পর থেকে বিষয়টি তদন্ত করে মতামতসহ জররুর ভিত্তিতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো। চিঠি দেওয়ার প্রায় দুই মাস পর ভবনটি ভাঙা শুরু করল প্রশাসন।

স্থানীয়রা এলাকাবাসী জানান, দ্বিতীয় বার আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হবার পর আব্বাস আলী কাটাখালি বাজারের পানি নিস্কাশনের প্রধান ড্রেনটি দখল করে তার উপর দোতলা মার্কেটের নির্মাণ কাজ শুরু করেন।

জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরখানেক আগে কাটাখালী পৌরসভার ওপর দিয়ে যাওয়া খালটি ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ পুনঃখনন করে। গত এপ্রিলের দিকে কাটাখালীর মেয়র সরকারি এই খালের ওপর ভবন নির্মাণ শুরু করেন। ১৯ জুলাই একতলার ছাদ ঢালাই সম্পন্ন করা হয়।

সরকারি খালের ওপর ভবন নির্মাণের অভিযোগ করেন পৌরসভার কয়েকজন কাউন্সিলর। এই অভিযোগের ভিত্তিতে গত আগস্ট মাসে পবা উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেন। এরপর কয়েক দিন কাজ বন্ধ থাকলেও পরে আবার জোরেশোরে নির্মাণকাজ শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে কটুক্তি করায় তার একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ভাইরাল হয়। এনিয়ে মেয়র আব্বাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হলে গত ৩০ নভেম্বর ঢাকার রাজমনি ঈশাখাঁ আবাসিক হোটেল থেকে তাকে গ্রেফতার করে। এর আগে কাটাখালি পৌর আওয়ামীলীগের আহবায়ক ও জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

Development by: webnewsdesign.com