পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা শোভন ও তার বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। সোমবারের রোড শোতে অংশ না নেওয়ায় বিজেপির অভ্যন্তরে সমালোচনার ঝড় ওঠে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে, মিছিলে না থাকার জন্য ক্ষমা চেয়ে কারণ ব্যাখ্যা করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বিজেপি নেত্রী বৈশাখী।
তিনি বলেন, কালকের (সোমবারের) মিছিলে যেতে পারল খুব আনন্দ হত। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই যেতে পারিনি। বিকাল ৩টার সময় সামান্য চেষ্টা করেছিলাম। কোনোভাবে যদি প্রস্তুত হয়ে বেরনো যায়। কিন্তু শোভনবাবুরও একশো মতো জ্বর ছিল সারাদিন। তা সত্ত্বেও উনি চেষ্টা করেছিলেন, ১০ মিনিটের জন্য যদি যাওয়া যায়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণেই আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি।
মিছিলে যেতে শর্ত ও বৈশাখীর ব্যাখ্যা
বিজেপি সূত্র থেকে সোমবারের মিছিলের কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই জানা যাচ্ছিল বৈশাখী কিছু শর্ত আরোপ করেছেন। শোনা যাচ্ছিল ওই দিন সকালের একটি ‘হট’ ফোনালাপের কথাও। ফোনের কথা অস্বীকার করেননি বৈশাখী।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে সকালে বিজেপির কল সেন্টার থেকে ফোন আসে। অসুস্থ অবস্থায় আমি কোনও রকমে ফোনটা ধরি। সেখানে জানতে চাওয়া হয়, আজ শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মিছিলটা হচ্ছে তো! আমি বলি হচ্ছে। আমাকে বলা হয়, আজ শুধু শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মিছিল। আপনার আসার প্রয়োজন নেই। আমি জানতে চাই, আপনি কোথা থেকে বলছেন, জবাবে বলা হয় আমি বিজেপি-র কল সেন্টার থেকে বলছি। কিন্তু আমাদের মিছিলে না যাওয়ার আসল কারণ এই ফোনটা ছিল না। আসল কারণ ছিল আমার অসুস্থতা। বিজেপির অভ্যন্তরে এ ঘটনায় তীব্র অসন্তোষের জন্ম হয়েছে। শীর্ষ নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ ও বিব্রত।
শোভন এখনও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি। বৈশাখী বলছেন, একটি মিছিলে না যাওয়া কোনও প্রভাব ফেলবে বলে আমার মনে হয় না। এটাই শেষ মিছিল না। আগামী দিনেও অনেক মিছিল হবে। সেখানে আমরা একসঙ্গেই পা মেলাব।
হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, দেড় বছর আগে বিজেপিতে যোগ দিলেও এখনও পর্যন্ত একবারের জন্যও দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেননি শোভন–বৈশাখী জুটি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলায় এলে তার সঙ্গে বৈঠক করেন দু’জন। এরপরই শোভনকে কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষকের পদে বসায় বিজেপি। বৈশাখীকে করা হয় সহ–আহ্বায়ক। পদ দেওয়ার পরই শোভনকে দিয়ে বড় শোডাউনের পরিকল্পনা করে বিজেপি। কিন্তু বৈশাখী-শোভন শোডাউনে না যাওয়ায় নতুন করে সংঘাতের আগুন জ্বালিয়ে দিল। যার জন্য বিধানসভা নির্বাচনের আগে অক্সিজেন পেয়ে গেল তৃণমূল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্বাগত মিছিল হওয়ার কথা থাকলেও তিনি না আসায় মিছিলের নতুন অ্যাজেন্ডা দাঁড়ায় আর নয় অন্যায় কর্মসূচি। মিছিলে যোগ দেন মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেই মিছিলে তৃণমূলের অস্থায়ী মঞ্চ থেকে জুতো–ইট ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ।
Development by: webnewsdesign.com