প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস চীনে মহামারী আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বাংলাদেশে না ঘটলেও আতঙ্কে চাহিদা বেড়েছে মাস্কের। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে মাস্কের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে এক শ্রেণির অসাদু ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাস্ক। আগে ফিল্টার মাস্ক বিক্রি করা হতো ২০-৩০ টাকায়। তা এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। এক বক্স সার্জিক্যাল মাস্কের আগে দাম ছিল ১২০ টাকা।
বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। টিস্যু মাস্ক আগে বিক্রি হতো ১০ টাকা, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।ব্যবসায়ীরা বলছেন, যদিও বাংলাদেশে বেশিরভাগ মাস্কের উৎস চীন, কিন্তু এখন উল্টো চীনে পাঠাতে চীনা নাগরিকসহ অনেকে বাজার থেকে প্রচুর মাস্ক কিনেছেন।চকবাজারের পাইকারি দোকানগুলোতে মাস্কের সংকট দেখা দিয়েছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, চায়না থেকে আমদানিকৃত ফিল্টার মাস্কগুলোর সরবরাহ একেবারে নেই বললেই চলে।ব্যাংক কর্মকর্তা শাকিল জানান, দারাজ থেকে যে মাস্ক ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে ২০ টাকা করে তিনি কিনেছিলেন, তা এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৫ টাকায়।ঢাকার পুরানা পল্টন থেকে ১০০ টাকায় একটি ফিল্টার মাস্ক কিনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সজিব।
ওই জানান, মাত্র এক সপ্তাহ আগে এই মাস্ক কিনছিলাম ২০ টাকায়। এখন মানুষেয় অসহায়ত্বকে পুঁজি করে বাড়তি টাকা আদায় করে নিচ্ছে বিক্রেতারা।নিউ মার্কের হকার্স বাদশা মিয়া বলেন, আমাদের কিছুই করার নাই। পাইকারি দোকানে দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
আগে এক বক্স সার্জিক্যাল মাস্কের পাইকারি দাম ছিল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কিন্তু এখন কিনতে হচ্ছে প্রতি বক্স ২০০ টাকায়। আগে প্রতি ডজন ফিল্টার মাস্কের পাইকারি দাম ছিল ২৫০ টাকা এখন কিনতে হচ্ছে ৫০০ টাকায়। এমনকি টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।মতিঝিলের লাজফার্মার এক কর্মী বলেন, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন আশঙ্কায় অনেকে মাস্ক সংগ্রহ করে রাখছে।
এ কারণে চাহিদা চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে।বিএমএ ভবন দোকান মালিক সমিতির সহকারী সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস লস্কর জানান, ৫০টি মাস্কের প্রতি বাক্স আগে তারা ৬০ টাকা বিক্রি করতেন, এখন সেটা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায়।তিনি জানান, পিএম ২.৫’ মডেলের যে মাস্ক প্রতিটির দাম আগে ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. হাসানুজ্জামান বলেন, চায়না থেকে এসব মাস্ক আমদানি করা হয়। বর্তমানে আমদানি বন্ধ হওয়ায় সংকট দেখা দেয়। ঢাকার ব্যবসায়ীরা চট্টগ্রাম থেকেও মাস্ক কিনে নিয়ে যায়। যার ফলে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছি। কিন্তু কোথাও মজুদ করা অবস্থায় কোনো মাস্ক পাইনি।
Development by: webnewsdesign.com