লেবানন কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনের একটি দাবির তদন্ত করছে। ইউক্রেন দাবি করেছে, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার অধীন একটি সিরীয় জাহাজ উত্তর লেবাননের ত্রিপোলি বন্দরে নোঙর ফেলেছে। অনেক বার্লি এবং গম রয়েছে জাহাজটিতে। বৈরুতে ইউক্রেনীয় দূতাবাস বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) জানিয়েছে, ইউক্রেনের গুদাম থেকে রাশিয়া এসব লুট করে এনেছে। খবর দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
শিপিং ডেটা ওয়েবসাইট মেরিন ট্র্যাফিক জানিয়েছে, বুধবার (২৭ জুলাই) ত্রিপোলিতে নোঙর ফেলে লাওডিসিয়া নামের ওই জাহাজটি। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জাহাজটি ক্রিমিয়া বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করেছে। এটিতে আন্তর্জাতিক নৌচলাচল বন্ধ। জাহাজে পাঁচ হাজার টন বার্লি এবং পাঁচ হাজার টন ময়দা রয়েছে। আমাদের সন্দেহ, ইউক্রেনের গুদাম থেকে এগুলো নেয়া হয়েছিল।এক বিবৃতিতে লেবানন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই প্রথম চুরি করা শস্য ও আটার চালান লেবাননে পৌঁছেছে। বৈরুতে রুশ দূতাবাস বলেছে, সিরিয়ার জাহাজ বা বেসরকারি কোম্পানিচালিত পণ্যবাহী জাহাজ লেবাননে পৌঁছানো নিয়ে কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই।
এর আগেও বেশ কয়েকবার ইউক্রেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে শস্য চুরির অভিযোগ এনেছিল। প্রতিটি অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়া।জাহাজের এক কর্মকর্তা জানান, জাহাজ থেকে কিছুই নামানো হয়নি। লেবাননের শুল্ক বিভাগ এখনো আমদানিসংক্রান্ত কাগজ দেয়নি। রাশিয়া ইউক্রেনের বিপুল পরিমাণ বার্লি চুরি করেছে–এ অভিযোগ পাওয়ার পর সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও শুল্ক বিভাগ সংবাদমাধ্যমকে নথি দেখাতে অস্বীকার করেছে।তিনি আরও জানান, জাহাজটিতে প্রায় ৮ হাজার টন ময়দা এবং ১ হাজার ৭০০ টন বার্লি ছিল।
চুরির অভিযোগের কারণে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) জাহাজটি থেকে কোনো পণ্য নামানো হয়নি। শুক্রবার (২৯ জুলাই) পর্যন্ত এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি লেবাননের শুল্ক বিভাগ।জাহাজটি লেবানন হয়ে সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জাহাজ কোম্পানি লেবাননে পাঁচ হাজার টন ময়দা নামানোর সিদ্ধান্ত নেয়। দেশটি তিন বছরের বেশি সময় ধরে অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। দেশটিতে খাদ্যসংকট চরমে। লেবানন তাদের চাহিদার বেশির ভাগ গম আমদানি করত ইউক্রেন থেকে, কিন্তু রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে।
বন্দরের এক কর্মী বলেন, লেবাননে ময়দা নামানোর পর জাহাজটির বাকি পণ্য নিয়ে সিরিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল। লেবাননে প্রতি টন আটা ৫৯ হাজার থেকে ৬১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সিরিয়ায় এক টন আটার দাম প্রায় ৫৬ হাজার টাকা। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মতে, লেবাননের অর্ধেক মানুষের কোনো খাদ্য নিরাপত্তা নেই।ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে কৃষ্ণসাগরের মূল বন্দরগুলোতে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম একপ্রকার বন্ধই রয়েছে। ইউক্রেনের দূতাবাস এবং লেবাননের মিলস অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান জানিয়েছেন, জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে নতুনভাবে লেবাননে গম রফতানি শুরু করেছে ইউক্রেন।
Development by: webnewsdesign.com