রাজশাহীর বাঘার নাজমুল হোসেন হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। এছাড়াও দোষ প্রমান না হওয়ায় এ মামলার অপর ১৫ আসামীকে খালাস দেয়া হয়েছে।
৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজশাহীর বাঘা উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের মিন্টু আলী (৩৫), মো. রানা (২১), মো. পানা (২৫), আরিফ হোসেন (২৫) ও শরিফ হোসেন (২২) এবং নাটোরের লালপুর উপজেলার মনিহারপুর গ্রামের আরজেদ আলী ওরফে ভোলা (৪৭)। আদালত তাঁদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন। জরিমানার অর্থ না দিলে আরও এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে আসামিদের।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এনতাজুল হক বাবু বলেন, এ মামলার আসামী ২৫ জন। তবে তাদের মধ্যে চারজন শিশু। সম্পুরক অভিযোগপত্র দিয়ে ওই চারজনকে শিশু আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়। যা বিচারাধিন রয়েছে। বাকি ২১ জনের বিচার হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। যাদের মধ্যে ছয়জনকে যাবজ্জীবন ও ১৫ জনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
তিনি আরো বলেন, মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে চারজনের বয়স কম হওয়ায় তাদের বিচার শিশু আদালতে চলছে
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আরজেদ আলীর ছেলে সুমন এলাকার নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। ২০১৯ সালের শেষের দিকে সুমন সেনা সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেলে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যে কোন মূল্যে সে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দেয়। সেনাবাহিনীর চাকরিতে প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি সে তার বন্ধুদের নিয়ে ওই ছাত্রীর পথ আটকে আবার প্রেমের প্রস্তাব দেয়।
ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানায়। তখন ছাত্রীর নানা আজিজুর রহমান সুমনের বাবা-মায়ের কাছে বিচার দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুমন। সেদিন বিকালে পার্শ্বর্তী বাঘা উপজেলার সুলতানপুর মোড়ে আজিজুলের ছেলে নাজমুল হোসেন ও আজিজুলের নাতি তারিকুল ইসলাম তুষারকে পেয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে সুমনসহ অন্য আসামিরা। পরে নাজমুলকে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে বাঘা থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বাবা আজিজুল।
এদিকে মামলার এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ। নিহত নাজমুলের চাচা আবু তালেব বলেন, প্রকাশ্যে নাজমুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছেন আসামিরা। কিন্তু রায়ে অনেকেই বেকসুর খালাস পেয়েছেন। তাঁরা এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
Development by: webnewsdesign.com