রাজশাহীর বাগমারায় এক প্রতারকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ এবং এর ভিডিও করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর স্কুলছাত্রী বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা থানায় মামলা করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত পুলিশ ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
পুলিশ ও মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার যোগিপাড়া ইউনিয়নের কোয়ালীপাড়া গ্রামের সাজের ছেলে ফারুক হোসেন (৩২) অষ্টম শ্রেণিতে পড়া ছাত্রীকে কৌশলে এক নারীর মাধ্যমে সম্প্রতি তাঁর বাড়িতে ডেকে নেন। ঘটনার দিন বাড়িতে কেউ ছিল না। এই সুযোগে তিনি ওই স্কুলছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ এবং গোপনে ভিডিও ধারণ করেন। ঘটনাটি প্রকাশ না করার জন্য স্কুলছাত্রীকে হুমকি দেওয়া হয়।
এদিকে ওই স্কুলছাত্রীকে তাঁর সঙ্গে আবারো মেলামেশার জন্য চাপ দেন। স্কুলছাত্রী তাঁর প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় এবং এড়িয়ে চলা শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষণের ভিডিও ছাত্রীর আত্মীয় স্বজন এবং এলাকার বেশ কিছু পরিচিত লোকজনের কাছে ইমো এবং হোটাসঅ্যাপের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বিষয়টি জানাজানির পর ছাত্রী ঘটনাটি তাঁর স্বজনদের খুলে বলে। পরে গত ৫ নভেম্বর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে একটি মামলা করা হয়। ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে প্রতারক ফারুক হোসেন এবং অপরাধে সহায়তা করা স্থানীয় এক নারীকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে এই ঘটনার পর থেকে ছাত্রী বাড়িতে প্রায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। লজ্জায় বিদ্যালয়েও যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে। স্কুলছাত্রীর এক স্বজন জানান, ঘটনার পর থেকে সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছে। অনেক বুঝিয়েও বিদ্যালয়ে পাঠানো যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন। মামলা দায়েরের এক সপ্তাহ পার হলেও পুলিশ এখন পর্যন্ত আসামিকে ধরতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রবিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ওই গ্রামে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও ঘটনা সর্ম্পকে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে। স্থানীয় অর্ধশত বাসিন্দা বলেন, অভিযুক্ত ফারুক হোসেন স্থানীয় ভাবে প্রভাবশালী ও প্রতারক হিসাবে পরিচিত। তাঁর বিরুদ্ধে নারী সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ রয়েছে। অনেক নারীর ভিডিও ধারণ করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। লজ্জায় তাঁরা আইনের আশ্রয় নিতে পারেনি। এসব নগ্ন এবং আপত্তিকর ভিডিও দিয়ে পর্ণো তৈরি করতে পারেন বলে আশংকা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে এই বিষয়ে অভিযুক্তের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর বাবাও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাগনদি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পুলিশ ধর্ষণের ভিডিওটি উদ্ধার করেছে। তবে আসামিরা পলাতক থাকায় গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে মন্তব্য করেন। তবে অন্য নারীদের প্রতারিত ও নির্যাতিত হওয়ার বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানিয়েছেন।
Development by: webnewsdesign.com