হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস, দম ফুরাইলেই ঠুস। গানটিকে সত্যি করে এক বছর আগে চিরবিদায় নিয়েছিলেন বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী এন্ড্রু কিশোর। বাংলা চলচ্চিত্রে ১৫ হাজারেরও বেশি গান গাওয়া এই শিল্পীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০২০ সালের ৬ জুলাই না ফেরার দেশে চলে যান এ প্লেব্যাক সম্রাট।
এন্ড্রু কিশোর ছয় বছর বয়সে সঙ্গীতের তালিম নেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তিনি রাজশাহী বেতারে নজরুল, রবীন্দ্র, লোকসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান শাখায় তালিকাভুক্ত হন। চলচ্চিত্রে তার প্রথম গান ছিল ১৯৭৭ সালের মেইল ট্রেন সিনেমার ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই’। কিন্তু ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ গানের জন্য শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন ১৯৮২ সালে।
বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী ছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তার কণ্ঠে অসংখ্য কালজয়ী গান কয়েক দশক ধরেই মানুষের মুখে মুখে। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে মারা যান তিনি। শরীরে নানা ধরনের জটিলতা নিয়ে এন্ড্রু কিশোর অসুস্থ অবস্থায় ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের উদ্দেশে দেশ ছেড়েছিলেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার শরীরে নন-হজকিন লিম্ফোমা নামের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়ে।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক লিম সুন থাইয়ের অধীনে তার চিকিৎসা শুরু হয়। কয়েক মাস ধরে সেখানে তার চিকিৎসা চলে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল চিকিৎসায় শিল্পীকে সহায়তা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা শুরুর কয়েক মাস তার অবস্থা কিছু ভালো হলেও শেষ দিকে এসে আবার অবনতি হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না দেখে করোনার সংকট সময়ের মধ্যেই গত বছরের জুনে মাসের ঢাকায় ফেরেন তিনি। অবস্থান করেন জন্মস্থান রাজশাহীতে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প, ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে, আমার বাবার মুখে, আমার সারা দেহ, আমার বুকের মধ্যেখানে, তুমি আমার জীবন, ভেঙ্গেছে পিঞ্জর, ওগো বিদেশিনী তোমার চেরি ফুল দাও, তুমি মোর জীবনের ভাবনা, আকাশেতে লক্ষ তারা চাঁদ কিন্তু একটারে, তোমায় দেখলে মনে হয়, কিছু কিছু মানুষের জীবনে, কি যাদু করিলা’র মতো অসংখ্য বাংলা গান উপহার দিয়েছেন তিনি।
গান গেয়ে জীবনে মোট আটবার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার।
Development by: webnewsdesign.com