বহদ্দারহাট-খতিবেরহাট সড়ক : জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ১২:৫৫ অপরাহ্ণ

বহদ্দারহাট-খতিবেরহাট সড়ক : জনসাধারণের ভোগান্তি চরমে
apps

বহদ্দারহাট মসজিদ সংলগ্ন খতিবেরহাটমুখী সড়ক সামান্য বৃষ্টিতে নগরী কাদায় একাকার। চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, রোগীসহ স্থানীয় লোকজন। চারদিনে চার কিলোমিটারের এই সড়কে ১২টির অধিক দুর্ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়রা জানান, নগরীর বহদ্দারহাট মসজিদ সংলগ্ন খতিবেরহাটমুখী সড়ক মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। অতি ব্যস্ততম এই সড়কের অবস্থা গ্রামীণ মেঠোপথের চেয়েও করুণ। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সড়কটি বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে এতটাই কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে যে, হেঁটে যাওয়াও দুরূহ হয়ে পড়ে।

জানা যায়, এই সড়ক দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার মানুষের চলাচল। এটি দিয়ে জামেয়া মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ, দারুল মারিফসহ ১০০’র অধিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর যাতায়াত। বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের হাজার হাজার মানুষের প্রতিদিনের চলাচলের পথ এটি। গত ৫ বছর ধরে শুধু আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এ সড়কের সংস্কারকাজ।
খাজা রোডের এনএমসি স্কুলের শিক্ষার্থী সৌরভ বড়ুয়া বলে, বর্ষা এখনও আসেনি। তারপরও সামান্য বৃষ্টিতে সড়কটিতে কাদামাটিতে সয়লাব। এই কাদা মাড়িয়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। পুরোপুরি বর্ষা এলে চলাচল করাই দায় হবে। তাছাড়া চারদিনে এখানে ১২টির অধিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। আগের মেয়র ২০২৩ সালের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এযাবৎ কোন কাজ হয়নি।
এদিকে, গতকাল বিকেলে ‘রাস্তার দ্রুত সংস্কার চাই, করতে হবে বর্ষার আগে’ স্লোগানে মানববন্ধন কর্মসূচি করার কথা ছিল ৮ নম্বর শুলকবহর বহদ্দারহাট সাংগঠনিক ওয়ার্ড জামায়াতের। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পর কর্মসূচি স্থগিত করা হয় বলে জানা গেছে।

দ্রুত সংস্কার চান এলাকার মানুষ। চাঁন মিয়া সড়ক সংলগ্ন চাক্তাই খাল, মির্জা খাল, উত্তরা খাল ও ত্রিপুরা খালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ শুরু হয় চার বছর আগে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই সড়ক সংস্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে স্থানীয়রা বলছেন, যেসব এলাকায় খালের কাজ শেষ সেখানে সড়ক সংস্কার এখনই শুরু করা সম্ভব। দেরিতে সড়ক সংস্কার কেবল ভোগান্তিই বাড়াবে।
হাজিরপুল এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের জানান, ভোগান্তি হলেও সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে কাজটি হওয়ায় আমরা খুশি। অনন্যা থেকে হাজিরপুল পর্যন্ত খালের কাজ শেষ। বর্ষার আগেই এ জায়গায় সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। হাজিরপুল থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত কাজ শেষ হতে আরও সময় লাগবে। সে পর্যন্ত অপেক্ষা কেবল ভোগান্তিই বাড়াবে।

দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস মেয়রের: চাঁন মিয়া সড়ক দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম শহরের ভেতরে কোন সড়ক সংস্কারহীন থাকবে না। সিডিএ’র জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই চাঁন মিয়া সড়ক দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে। এলাকাবাসীর দুর্ভোগ আর থাকবে না।

ডিসেম্বরেই মিলবে মুক্তি: জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, প্রায় ৪ কিলোমিটার জুড়ে খালের পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, ব্রিজ, কালভার্ট ও ড্রেনের কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে আমরা কাজ করছি। এরপর খাল সংলগ্ন সড়ক সংস্কার করা হবে।

Development by: webnewsdesign.com