শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা এখনো চালু আছে। গত রোববার ঠাকুরগাঁও সদরের ঝাড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ইটভাটা। বন্ধের নির্দেশ দিলেও তা এখনো চালু আছে। গত রোববার ঠাকুরগাঁও সদরের ঝাড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন লঙ্ঘন করে ভাটায় ইট পোড়ানোর অভিযোগে অভিযান চালিয়ে অবৈধ তিনটি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেয় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন। কিন্তু সেই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে মালিকেরা ভাটায় ইট পুড়িয়ে যাচ্ছেন।
ইটভাটাগুলো হলো সদর উপজেলার বড়দেশ্বরী এলাকার কে এস ব্রিকস, আরাজি ঝাড়গাঁও এলাকার কে এস ব্রিকস ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বারোঢালি এলাকার কেয়া-১ নামের ইটভাটা। গত রোববার সরেজমিন ভাটাগুলোতে ইট পোড়ানোর দৃশ্য দেখা গেছে।
এসব ইটভাটার জেলা প্রশাসনের সনদ ও পরিবেশ অধিদপ্তর ছাড়পত্র নেই। এ ছাড়া ভাটা তিনটির মালিকেরা আইন লঙ্ঘন করে জ্বালানি কাঠ পুড়িয়ে তিন ফসলি জমি, লোকালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
গত ২৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) আবদুল কাইয়ুম খান ওই তিন ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। আদালতের বিচারক তখন ভাটার মালিকদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানার পাশাপাশি ভাটায় ইট পোড়ানোর কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।
রোববার সকালে দেখা গেছে, সদর উপজেলার বড়দেশ্বরী এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে বিস্তর সবজিখেতের মধ্যে জ্বালানি কাঠ ও বাঁশের মুড়া জ্বালিয়ে কে এস ব্রিকসে ইট পোড়ানো হচ্ছে। এই ভাটার মালিক মুশারুল হক।
মোলানী এলাকার আরাজি ঝাড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেঁষে আবদুস সোবহানের কে এস ব্রিকস ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বারোঢালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে সফিকুল ইসরামের কেয়া-১ ভাটাতেও একইভাবে জ্বালানি কাঠ জ্বালিয়ে ইট পোড়ানোর কাজ চলছিল।
জেলায় কতটি ভাটায় ইট পোড়ানো হয়, এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ঠাকুরগাঁও কাস্টমের রাজস্ব কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১১৭টি ইটভাটা চলতি মৌসুমে ইট পোড়ানোর জন্য রাজস্ব ফি জমা দিয়েছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলার ইটভাটাগুলোর মধ্যে কেবল দুটির হালনাগাদ করা ছাড়পত্র আছে। আর জেলা প্রশাসকের নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলার কোনো ইটভাটা মালিককেই ইট পোড়ানোর জন্য অনুমতির সনদ দেওয়া হয়নি।
সদরের ৪৯ ইটভাটার মধ্যে ১২টি, রানীশংকৈলের ২৭টির মধ্যে ৭ ও বালিয়াডাঙ্গীতে ১৮টির মধ্যে ৮টি ইটভাটা দ্বৈবচয়নের মাধ্যমে নমুনা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়। সরেজমিন সেসব ভাটায় দেখা যায়, সদরের ৯টি, রানীশংকৈলের ৬ ও বালিয়াডাঙ্গীর ৭টিতে জ্বালানি কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি হচ্ছে।
সম্প্রতি জরিমানা করা হয় সদর উপজেলার বড়দেশ্বরী এলাকায় কে এস ব্রিকস ইটভাটার মালিক মুশারুল হককে। তিনি বলেন, বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ থাকায় তিনি ভাটা চালু রেখেছেন। প্রায় সব ভাটাই একইভাবে চলছে। সেগুলো বন্ধ হলে এই ভাটাও বন্ধ করে দেওয়া হবে। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান বলেন, নির্দেশ অমান্য করে ভাটা চলছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। আবার অভিযান চালানো হবে।
Development by: webnewsdesign.com