ফ্যাসিবাদের দোসর আবুল খয়েরের সভাপতিত্বে বিএনপি-জামাত নেতাদের উপস্থিতিতে সভা; সমালোচনার ঝড়

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫ | ৭:৩৩ অপরাহ্ণ

ফ্যাসিবাদের দোসর আবুল খয়েরের সভাপতিত্বে বিএনপি-জামাত নেতাদের উপস্থিতিতে সভা; সমালোচনার ঝড়
apps

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার উপর হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার আসামী আওয়ামীলীগের দোসর আবুল খয়ের চৌধুরীর সভাপতিত্বে জকিগঞ্জে বিএনপি, জামায়াত, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামি আন্দোলনের নেতারা এক সারিতে বসে সভা করতে দেখা গেছে।

এই সংবাদ প্রকাশের পরপর সোস্যাল মিডিয়ায় এর ছবি শেয়ার করে ব্যাপক সমালোচনা ঝড় বইছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দায়ের করা মামলার বাদী হোসাইন আহমদ ছবিটি শেয়ার করে লেখেন, সিলেটের জকিগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভাইদের উপর হত্যা চেষ্টা মামলার আসামি ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের সহযোগী এ ধরনের প্রোগ্রামে নেতৃবৃন্দের সাথে বেমানান।আমরা বিএনপি-জামায়াতের নেতৃবৃন্দের কাছে আহবান জানাচ্ছি এই ফ্যাসিবাদের দোসরকে আটক করে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করুন।

হাসান আহমদ নামের আরেকজন ফেইসবুক ব্যবহারকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, “আমরা সবাই ভাই ভাই, আওয়ামী লীগ বিএনপি ভেদাভেদ নাই”।

একই ছবি ও পোষ্ট শেয়ার করেছেন অসংখ্য মানুষ। এই সভা শেষ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে ফেইসবুক জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে। বিশেষ করে বিএনপি, জামাত, জমিয়ত, ইসলামি আন্দোলনের নেতাদের আবুল খয়ের চৌধুরীর পাশাপাশি বসাকে ভালো চোখে দেখছে না চব্বিশের বিপ্লবের কর্মীরা। তারা প্রশ্ন তুলছে, তবে কী আমাদের জকিগঞ্জেও আওয়ামীলীগ পুনর্বাসনের ঠিকা নিয়েছেন নেতারা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অনেক নেতার সাথে আলাপ করে জানা গেছে, জকিগঞ্জে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন মেনে নেওয়া হবে না। তারা এই চিহ্নিত দোসরদের মাঠে ময়দানে মোকাবেলা করবে।

আবুল খয়ের চৌধুরী পতিত সৈরাচার শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের কর্মী ও সিলেট মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি মাসুকউদ্দিন আহমদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। তাছাড়া আবুল খয়ের আওয়ামী ঘরানার ঘনিষ্ট দৈনিক জনকন্ঠ পত্রিকার জকিগঞ্জ প্রতিনিধি। বিগত সৈরাচারী সরকারের আমলে এই আবুল খয়ের ফ্যাসিবাদী সরকারের অনেক সুযোগ সুবিধা বাগিয়ে নেন। প্রভাবশালী নেতা মুক্তিযোদ্ধা মাসুকউদ্দিনের ঘনিষ্টজন হিসেবে প্রভাব দেখিয়ে বহু বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের সায়েস্তা করতেন এই আবুল খয়ের। সৈরাচার সরকার পতনে ছাত্র জনতার আন্দোলন চলাকালে এই আবুল খয়ের ও তার নেতৃত্বাধীন প্রেসক্লাবের অনেক তথাকথিত সাংবাদিক সরাসরি ছাত্র জনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। উনারই এক সহকর্মী যুগান্তরের হাসিব প্রকাশ্যে সোসাল মিডিয়ায় উস্কানিমূলক পোষ্ট দিয়ে ছাত্রদের ৪ আগষ্ট আন্দোলনে নামলে প্রতিহতের হুমকি দেয়। ফলশ্রুতিতে ৪ আগষ্ট জকিগঞ্জে ছাত্র জনতার উপর তাদের উস্কানিতে আওয়ামিলীগ ছাত্রলীগের গুন্ডা বাহিনী নিরীহ ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা ও বাজারে ব্যবসায়ীদের দোকানে হামলা করে।

৫ আগষ্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবে হাসিনা পালানোর পর ঘা ঢাকা দেন এই আবুল খয়ের-হাসিব গংরা। পরবর্তিতে তারা কৌশলে বিএনপি ও অন্যান্য দলের ছত্রছায়ার পুনর্বাসনের সুযোগ খোজতে থাকে। অভিযোগ রয়েছে জকিগঞ্জের ইসলামি আন্দোলনর এক নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যাতায়াত রয়েছে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের মামলার অন্যতম আসামী ও কুখ্যাত ইসলামী দল বিদ্বেশী ককটেল ফারুকের ডানহাত তথাকথিত সাংবাদিক হাসিব। তার সম্পাদনায় পরিচালিত জকিগঞ্জ আই টিভি নামক পেজ দিয়ে বিগত সময়ে অনেক বিএনপি-জামাতের নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে। বর্তমানে জনরোষ থেকে বাচতে খোলস পাল্টিয়ে বিএনপি নেতাদের আইটিভিতে বিভিন্ন পদ উপহার দিয়ে পুনর্বাসনের চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও জকিগঞ্জের নব নিযুক্ত ইউএনও আসার পরে গণমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় প্রকাশ্যে আইটিভি ও আল-হাসিবের ব্যপারে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন জকিগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামির এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি দেলোয়ার লস্কর। তার পরও ওদের দৌরাত্ম যেন থামছেই না, বরং প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়ে তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

শুধু তাই নয়, এই বার একধাপ এগিয়ে তার সভাপতিত্বে বিএনপি, জামায়াত, জমিয়ত, ইসলামি আন্দোলন, পুলিশ কর্মকর্তা পর্যন্ত তার সভায় যোগ দিয়ে বক্তব্য রেখেছেন বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

Development by: webnewsdesign.com