প্রধানমন্ত্রীকে নিজের আঁকা ছবি উপহার দিতে চান বাক প্রতিবন্ধী মুন্নি

সোমবার, ১২ অক্টোবর ২০২০ | ১১:৫৯ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রীকে নিজের আঁকা ছবি উপহার দিতে চান বাক প্রতিবন্ধী মুন্নি
apps

মুখে ভাষা নেই। জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না মুন্নি। মানুষের মুখে উচ্চারিত ‘শেখ মুজিব’ নামটি সোনার সৌভাগ্য তার হয়নি। মুখ ফুটে বলতে পারে না, হে জাতির পিতা শেখ মুজিব তোমায় ভালোবাসি! তাই তো রং তুলির আঁচরে মনের মাধুরী মিশিয়ে অংকন করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুর ছবি। হৃদয়ে তার বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম।

মুন্নি অপলক তাকিয়ে থাকে তার আঁঁকা ছবির দিকে। তার চাহনিতে ফুটে ওঠে মহান নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা আর ভালোবাসার নমুনা। কথাগুলো বলছিলাম- টাঙ্গালের ঘাটাইল উপজেলার বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী সুইটি আক্তার মুন্নি’র (১৯)। সৃষ্টিকর্তা তাকে কথা বলার কোনো ক্ষমতা দেননি, কিন্তু দিয়েছেন সুন্দর দুটি হাত। কথা বলতে না পারলেও, তার আঁকা ছবি ঠিকই কথা বলে।

একবার চোখের দেখায় আঁকতে পারে সব ধরনের ছবি। এমনি এক প্রতিবান চিত্রশিল্পী বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী সুইটি আক্তার মুন্নি। জন্ম শেরপুর জেলার শ্রীবর্দ্দী উপজেলার কুড়িকাহনীয়া গ্রামে হলেও, বাবার চাকরির সুবাদে পুরো পরিবার এখন স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পৌর এলাকার সবুজবাগে। তার বাবার নাম আব্দুল মালেক পেশায় একজন পুলিশ কনস্টেবল ও মা গৃহিনী সুফিয়া বেগমের ঘরে তিন মেয়ের মধ্যে মুন্নি বড়।

মুন্নির মুখে কথা ফোটার আগেই মাত্র ছয় মাস বয়সে আক্রান্ত হন নিউমোনিয়া রোগে। তার পরিবারের ধারণা, নিউমোনিয়া রোগে কেড়ে নিয়েছে মুন্নি’র মুখের ভাষা। অন্য সাধারণ শিশুদের মতোই পরিবারে বেড়ে ওঠে মুন্নি। সুস্থ স্বাভাবিক ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে ২০১৭ সালে এসএসসি এবং ২০১৯ সালে এইচএসসি পাস করেন। মুন্নি ম্যানেজমেন্ট বিষয় নিয়ে বর্তমানে পড়াশোনা করছেন ভূঞাপুর সরকারি ইব্রাহিম খাঁ কলেজে। সে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।

মুন্নির মা বলেন, ‘আমার মেয়ে যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে, তখন থেকে একটু একটু করে ছবি আঁকা শুরু করে। ছবি আঁকার কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তার নেই। তবু চোখের দেখায় হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় যে কোনো ধরনের ছবি আঁকতে পারেন। তিনি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী, শেখ রাসেলসহ তাদের পরিবারের ছবি বেশি আঁকতে পছন্দ করেন।’

মুন্নির মা আরও বলেন, ‘আমার মেয়ের অনেক ইচ্ছে একদিন ঢাকায় গিয়ে আর্ট প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে। সেখানে সে বিজয়ী হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরষ্কার আনবে। মুন্নির মনে অনেক ইচ্ছে-আকাক্সক্ষা তার আঁকা ছবি প্রধানমন্ত্রীর হাতে উপহার দিতে পারলেই সে সার্থক হবে। আমিও মরে গিয়ে শান্তি পাবো আমার মেয়ের ইচ্ছে পূরণ হলে।’

Development by: webnewsdesign.com