পুরুষদের জন্য তৈরি হলো নতুন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল, যার নাম ওয়াইসিটি-৫২৯। এই পিলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য—এটি হরমোন পরিবর্তন না করেই জন্মনিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। বিজ্ঞান বিষয়ক ওয়েবসাইট সায়েন্স অ্যালার্ট জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ওষুধটি তৈরি করেছেন এবং বর্তমানে এটি ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে।
এই ওষুধটি ইতোমধ্যে ইঁদুর ও বানরের ওপর পরীক্ষিত হয়েছে এবং আশাব্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে। পুরুষ ইঁদুরদের এই ওষুধ দেওয়ার এক মাসের মধ্যে তাদের সঙ্গীদের গর্ভধারণের হার প্রায় ১০০ শতাংশ কমে যায়। একই ধরনের ফল পাওয়া গেছে বানরের ক্ষেত্রেও। সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো, ওষুধটি বন্ধ করার পর প্রাণীরা স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দেওয়ার সক্ষমতা ফিরে পায়।
ওয়াইসিটি-৫২৯ শরীরের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ হরমোন—টেস্টোস্টেরন, এফএসএইচ ও ইনহিবিন-বি—এর মাত্রা অপরিবর্তিত রাখে। এটি রেটিনোইক অ্যাসিড রিসেপ্টর (আরএআর)-আলফা নামক একটি প্রোটিনকে টার্গেট করে কাজ করে, যা শুক্রাণু উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।
নারীদের হরমোনভিত্তিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলের অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকায় হরমোনবিহীন পদ্ধতির খোঁজ করছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই পিল সে চাহিদা পূরণে সম্ভাবনাময় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডেও ওষুধটির মানবদেহে পরীক্ষার দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে।
এদিকে, ইওরচয়েস থেরাপিউটিকস কোম্পানি এবং কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই গবেষণায় যুক্ত। বিজ্ঞানীরা জানান, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০ শতাংশ গর্ভধারণ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটে, যা নতুন ও কার্যকর গর্ভনিরোধকের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে।
অন্যদিকে, বেইলর কলেজ অব মেডিসিন সিডিডি-২৮০৭ নামের আরেকটি হরমোনবিহীন ওষুধ নিয়েও গবেষণা চালাচ্ছে। এটি ইনজেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় এবং ইঁদুরের ক্ষেত্রে কার্যকর ফল পাওয়া গেছে, যদিও এখনো মানুষের ওপর পরীক্ষা শুরু হয়নি।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০-এর দশকে ভ্যাসেকটমি পদ্ধতির পর পুরুষদের জন্য উল্লেখযোগ্য কোনো গর্ভনিরোধক বাজারে আসেনি। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ পুরুষ নতুন পদ্ধতির গর্ভনিরোধক গ্রহণে আগ্রহী, এবং নারীরাও তাতে আস্থা রাখেন।
Development by: webnewsdesign.com