বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেছেন, পুঁজিবাদী ধারায় চলছে বলে বাংলাদেশে বৈষম্য বাড়ছে। তাই পুঁজিবাদী ধারা থেকে একটু সরে আসতে হবে।
শনিবার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তি ও মুজিব শতবর্ষে সিলেট জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন চিন্তা ও ২০৪১ সালের বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে মুখ্য আলোচকের বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে অনষ্ঠিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন, সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম। আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।
অধ্যাপক ড সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সমতাভিক্তিক প্রবৃদ্ধিই প্রকৃত উন্নয়ন; কিন্তু বাংলাদেশে ধনবৈষম্য বাড়ছে। বিশেষ করে করোনা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এ বৈষম্য। বিত্তবানরা আরও বিত্তশালী হচ্ছে। দরিদ্ররা হচ্ছে আরও দরিদ্র। এভাবে উন্নয়ন হতে পারেনা। তাই উন্নয়নের জন্যে বৈষম্য কমাতে হবে। বঙ্গবন্ধু বৈষম্য কমাতে চেয়েছিলেন।
তিনি বলেন, দেশে বিচার ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়নি। এ কারণেই সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ৮৩ বার পিছিয়েছে।
মুখ্য আলোচক উল্লেখ করেন, মার্কিন পররাষ্ট্র সচিব হেনরি কিসিঞ্জার যখন বলেছিল, বাংলাদেশ হবে একটি তলাবিহীন ঝুড়ি তখন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ৭ পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলেন। তাই বঙ্গবন্ধুকে চিনতে হবে, জানতে হবে, বুঝতে হবে। তাহলেই কেবল উন্নয়নের সঠিক পথে হাঁটবে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তি চেয়েছিলেন। এ লক্ষ্যেই তিনি সাময়িক সময়ের জন্যে প্রবর্তন করেছিলেন বাকশাল পদ্ধতি। এর পরপরই দেশে দ্রব্যমূল্য থেকে শুরু করে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল।
অধ্যাপক ড সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর দৃষ্টি আর অন্তর জুড়ে ছিল এ দেশের মাটি ও মানুষ। তাই সংবিধানে তিনি জনগণকে রাষ্ট্রের মালিক বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন, যা আর কোথাও নেই।
অধ্যাপক শওকত আরা হোসেন বলেন, বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। মুজিব পরিবারের অবদানকে ভুলে যাওয়া যাবেনা। প্রতিটি বাঙালিকে বঙ্গবন্ধুর মতো লোভ-লালসাহীন হতে হবে। তিনি দুঃখ করে বলেন, এখন আর আগের মতো লেখাপড়া হয় না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ডাকে রাজপথে নেমেছিলাম। জীবন বাজি রেখেছিলাম মুক্তিযুদ্ধে। ‘যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’- তঁার এই নির্দেশই সব স্পষ্ট করে দিয়েছিল।
স্বাগত বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে জানার সুযোগ হয়নি। তার নামটি পর্যন্ত উচ্চারণ করা যেতোনা পাকিস্তানি দোসররা সেই পথ বন্ধ করে রেখেছিল।
Development by: webnewsdesign.com