কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর পিংকী খাতুন শিল্পীকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত পলাতক স্বামীর মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছে কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালত। আদালতের রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন চায় পিংকীর পরিবার।
দশ বছর আগে ২০১১ সালের ২৭ মে পিংকীকে তার স্বামী রাসেল বাবু শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছে মর্মে ভূরুঙ্গামারী থানায় মামলা করেন পিংকীর মা রোকেয়া বেগম। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারী কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান অভিযুক্ত স্বামী রাসেল বাবু (৩০) কে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার রায় প্রদান করেন। অভিযুক্ত রাসেল বাবু পলাতক থাকায় তার অনুপস্থিতিতে বিচার কার্য সম্পন্ন হয়। পিংকীর পরিবার অবিলম্বে পলাতক রাসেলকে গ্রেফতার করে আদালতের রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবী জানায়।
পিংকীর মা রোকেয়া বেগম (৬০) জানান, গত দশ বছর যাবত আমরা এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলাম। কাঙ্খিত রায় পাওয়ায় আদালতকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করছেন তিনি।
জানাগেছে, উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথরডুবি গ্রামের হাতেম আলী ফকিরের মেয়ে পিংকী খাতুন শিল্পী (২২) ভালোবেসে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার নাখারগঞ্জ বাজার এলাকার সাইফুর রহমানের ছেলে রাসেল বাবুকে। বিয়ের দেড় বছরের মাথায় যৌতুকের জন্য পিংকীর ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা পিংকী নিজের ও অনাগত সন্তানের ভবিষ্যত চিন্তা করে বাবার বাড়ীতে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে রাসেল পিংকীকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় একদিন পিংকীর বাবা-মা বাড়িতে না থাকার সুযোগে রাসেল পিংকীর বাবার বাড়িতে এসে পিংকীকে নিয়ে যেতে চায়। পিংকী এতে রাজি না হওয়ায় বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে রাসেল বাবু অন্তঃসত্ত্বা পিংকীকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং নাকে-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পিংকীর মরদেহ খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যায়।
দীর্ঘ প্রায় দশ বছর যাবত মামলার শুনানী ও সাক্ষ্য প্রমাণে হত্যাকান্ডে রাসেল বাবুর সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
Development by: webnewsdesign.com