পাগলা-বীরগাঁও সড়ক  সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ 

মঙ্গলবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ | ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ

পাগলা-বীরগাঁও সড়ক  সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ 
apps

সুনামগঞ্জ জেলার প্রবেশমূখ শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা-বীরগাঁও সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেছে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের এই অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা নিম্নমানের সামগ্রী সরিয়ে ভালোমানের সামগ্রী ব্যবহার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাগলা বাজার অংশ থেকে বীরগাঁও বাজার পর্যন্ত ৮ কিলোমিটারের বেশি জায়গায় নির্মাণ করা হবে পাগলা-বীরগাঁও সংযোগ সড়ক। সড়কটির পাগলা বাজার অংশের শুরু থেকে ১৭০ মিটার দু’পাশেই বৃদ্ধি করা হবে। বাজারের প্রথম অংশে (রাস্তার মুখে) প্রশস্ত ধরা হয়েছে প্রায় ৭ দশমিক ০৩ মিটার বা ২১ দশমিক ৯ ফুট। রাস্তার বাকি অংশ বাড়ানো হবে না তবে মাটি কেটে রাস্তার ফুটপাথ বাড়ানো হবে। রাস্তাটি নির্মাণ হচ্ছে দুই অংশে। প্রথম অংশ পাগলা বাজারের বীরগাঁও রোডের মুখ থেকে ৭ কিলোমিটার। এখানে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। দ্বিতীয় ভাগে বীরগাঁও খালপাড় থেকে গুইড়াখালের ব্রিজ হয়ে বীরগাঁও বাজার পর্যন্ত। এখানেও প্রায় একই পরিমাণ নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে। এই কাজটি করছে ফরিদপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সালেহ্ এন্ড ব্রাদার্স।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা-বীরগাঁও সড়কটি সংস্কার করা স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। দীর্ঘদিনে দাবির প্রেক্ষিতে কাজ শুরু হলেও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সড়কটির দ্বিতীয় ভাগে পুরোদমে চলছে মাটি ভরাটের কাজ। তবে মাটি ভরাটের কাজেও অনিয়ম হচ্ছে। বীরগাঁও খালপাড় অংশে পাখিমারা হাওরের ঢেউ ঠেকানোর জন্য পাথরের যে ব্লক ব্যবহার করা হয়েছে সেই ব্লক না উঠিয়ে ব্লকের উপরে মাটি ফেলা হচ্ছে। ব্লকের উপর মাটি ফেলায় বৃষ্টি এবং বন্যার সময় এ মাটি দ্রুত সরে যাবে। সড়কের সংস্কার ও নতুন নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ভাঙা ইট, মাটি মিশ্রিত পাথর ও বালুর পরিবর্তে নিম্নমানে বিটমাটি ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। সোমবার সরেজমিনে কাজের সাইটে নিম্নমানের ইট, বালুমিশ্রিত পাথর ও বালুর পরিবর্তে নিম্নমানের বিট বালু মজুদ পাওয়া গেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, একাধিকবার ঢালাইয়ের কাজে মাটিসহ পাথর ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিষেধ মানেনি। এছাড়াও রাস্তা বৃদ্ধি করতে মাটিখুঁড়ে যে অংশে বালুর ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বালু নাকি বিটমাটি বোঝার কোনো উপায় নেই। ঢালাই কাজে সিমেন্টের অনুপাতের তুলনায় বালু বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

কান্দিগাঁও গ্রামের মো. কামাল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত কয়দিন আগে কান্দিগাঁও কেন্দ্রিয় মসজিদের সামনে রাস্তার ওপর যে ভাঙা ইট রাখা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্নমানের। পাথরের স্তুপের দিকে তাকালে মাটি দেখা যায়। বিটমাটি না বালির ব্যবহার করা হচ্ছে তা বুঝার উপায় নেই। অনেক দিনের প্রত্যাশার সড়ক এটি। যদি দুই নম্বরি কিছু হয় তাহলে তো এলাকাবাসী প্রতিবাদি হয়ে উঠবেন।

তারা জানান, ঢালাইয়ের কাজে যে পরিমান সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে, সে তুলনায় বালুর ব্যবহার হচ্ছে বেশি। কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. সালেহ্ আহমদ বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের কোনো অনিয়মের অতীত রেকর্ড নেই। আমি এরকম ছোট কাজও করি না। রাস্তায় রাখা ভাঙা ইটের ব্যপারে যারা অভিযোগ করেছেন তাদের ইট সম্পর্কে হয় তো ধারণা কম। এখানে দুই নাম্বার কোনো ইট ব্যবহার করা হয়নি। পাথরে মাটি থাকতে পারে। আমি কথা বলবো আমার কন্ট্রাক্টার ও ইঞ্জিনিয়ারের সাথে। পাথর ধুয়ে ব্যবহারের কথা বলবো। বালু ও বিটমাটির ব্যাপারে এক্ষুনি কথা বলে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল নূর তারেক বলেন, কোনো অনিয়ম হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইট-পাথর যদি ভালো না হয় এগুলো দিয়ে কাজ করতে দেওয়া হবে না।

Development by: webnewsdesign.com