নেত্রকোনা বাবা-সন্তানের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী রিমান্ডে

সোমবার, ২২ নভেম্বর ২০২১ | ৪:৩২ অপরাহ্ণ

নেত্রকোনা বাবা-সন্তানের লাশ উদ্ধার, স্ত্রী রিমান্ডে
apps

নেত্রকোনা একটি বাসা থেকে বাবা–ছেলের লাশ উদ্ধারের পর করা মামলায় শিশুটির মাকে দুদিনের জন্য রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। রোববার সন্ধ্যায় শুনানি শেষে নেত্রকোনা আদালতের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সোহেল ম্রং এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে সোমবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ।

ওসি শাকের আহমেদ জানান, আবদুল কাইয়ুম সরদার (৩২) ও তার দুই বছরের ছেলে আহনাব শাকিলের মৃত্যুর ঘটনায় গত শুক্রবার বিকালে কাইয়ুম সরদারের ছোটভাই মোস্তফা আহমেদ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে কাইয়ুমের স্ত্রী ছালমা খাতুনসহ (২১) অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই মামলায় গ্রেফতার হওয়া ছালমাকে শুক্রবার সন্ধ্যায় আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। এর পর রোববার সন্ধ্যায় শুনানি শেষে আদালত তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

এদিকে মৃত্যুর আগে বুধবার দিবাগত রাত ৩টা ৫৭ মিনিটে কাইয়ুম তার ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রশিদের কাছে পাঠানো মেইলে লিখে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পুলিশ তদন্ত চালাচ্ছে। গতকাল রোববার সকালে ওই মেইলটি পুলিশের হাতে আসে।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় শহরের নাগড়া এলাকার পাঁচতলা একটি ভবনের চারতলা থেকে পুলিশ আবদুল কাইয়ুম সরদার ও তার দুই বছরের ছেলের লাশ উদ্ধার করে। আবদুল কাইয়ুমের স্ত্রী ছালমা খাতুন তখন জানিয়েছিলেন, প্রতিদিনের মতো বুধবার রাতে খাবার খেয়ে একটার দিকে তারা এক বিছানায় ঘুমিয়ে পড়েন।
পর দিন (বৃহস্পতিবার) ভোর ৫টায় জেগে উঠে পাশের কক্ষে একটি ফ্যানের সঙ্গে স্বামী ও সন্তানের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান তিনি। পরে তিনি রশি কেটে লাশ দুটি নামিয়ে ফেলেন। এর পর বাসার দরজা খুলে বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন।

আবদুল কাইয়ুম সরদারের বাড়ি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার গোপালের খামার গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আক্কাস সরদারের ছেলে। তিনি নেত্রকোনায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অফিস সহায়ক হিসেবে চাকরি করতেন। শহরের নাগড়া এলাকার ওই বাসার চারতলার ডি-৩ ইউনিটে স্ত্রী-সন্তানসহ তিনি ভাড়া থাকতেন। তিনি ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ফকিরগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আসাদ আলীর মেয়ে ছালমা খাতুনকে বিয়ে করেন। ওই বছরের ডিসেম্বরে তাদের ছেলের জন্ম হয়।

নেত্রকোনা পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুন্সী বলেন, আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এই মেইলে আবদুল কাইয়ুম বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করেছেন। তিনি নিজেকে অসহায় উল্লেখ করে পৃথিবী থেকে বিদায় নেওয়ার কথা লিখেছেন।

কিন্তু কেন তিনি এসব লিখেছেন, ছেলেকে হত্যার পর কাইয়ুম আত্মহত্যা করেছেন কিনা, নাকি এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড অথবা আত্মহত্যা করে থাকলে কেন তিনি আত্মহত্যা করলেন বা হত্যা হয়ে থাকলে কীভাবে এই হত্যার ঘটনা সংঘটিত হয়। এতে অন্য আরও কেউ জড়িত কিনা এসব বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে। তার স্ত্রী ছালমাকেও এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমরা শিশুটি ও তার বাবার ডিএনএ নমুনা, ভিসেরা নমুনা পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারে পাঠিয়েছি বলেও জানান তিনি।

Development by: webnewsdesign.com