নামে কী আসে যায়! জেনস সুমন নাকি সুমন?

শনিবার, ১১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১২:৪০ অপরাহ্ণ

নামে কী আসে যায়! জেনস সুমন নাকি সুমন?
apps

নব্বই দশকের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী জেনস সুমন। ‘১টা চাদর হবে’ গানটি দিয়ে দেশব্যাপী জনপ্রিয়তা পান তিনি। সলো অ্যালবাম, মিক্সড অ্যালবাম মিলিয়ে প্রায় ৩০০ গান গেয়েছেন তিনি।

লম্বা বিরতির পর চলছে নতুন গানের কাজ। দীর্ঘ সংগীত ক্যারিয়ারের গল্প ও বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন শিশির রোয়েদাদ।

সংগীতজীবনের শুরুটা হলো কীভাবে?

শৈশবে বাবা গানের স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলেন, কিন্তু প্রতিদিন নিয়ম করে সারগাম করতে ভালো না লাগায় ৬ মাস পরই স্কুল ছেড়েছি। নব্বইয়ের শুরুতে একটি কনসার্টে গান গাইতে এসেছেন রবি চৌধুরী, তপন চৌধুরী, ডলি সায়ন্তনী, বেবী নাজনীন, রুক্সিসহ আরো কিছু সলো আর্টিস্ট। কেবল একটি লোকাল ব্যান্ড ‘এনসিবি’-এর গান গাইবার কথা সেই কনসার্টে। কিন্তু দলের ভোকাল সেদিন সেখানে পারফর্ম না করায় তার বদলে আমি পারফর্ম করি। মূলত সেদিন থেকেই আমার সংগীত চর্চা ক্যারিয়ারের দিকে মুভ করা শুরু করে। দর্শক-শ্রোতাদের গ্রহণযোগ্যতা আমাকে দারুণভাবে জাগিয়ে তোলে।

গান থেকে দূরে থাকার কারণ কী?

নানা কারণে দূরে ছিলাম। তার মধ্যে অন্যতম কারণ আমার ইচ্ছে করেনি গাইতে। যেহেতু নিজের ইচ্ছেই গান করি, তাই না গাওয়ার ইচ্ছেটাকেও গুরুত্ব দিয়েছি।

আবার শুরু প্রসঙ্গে কী বলবেন?

আবার শুরুটা ভালো হয়েছে। বেশ কিছু টিভি লাইভ, কনসার্ট এবং নতুন নতুন গান রিলিজ করছি। সম্প্রতি ৪টি গান নিয়ে কাজ করেছি। জি-সিরিজের ব্যানার থেকে রিলিজ হচ্ছে গানগুলো। দুটি মুক্তি পেয়েছে আর দুটি আছে অপেক্ষায়। কিছু কাজ হাতে আছে। আধ্যাত্মিক ফোক, ক্ল্যাসিক এবং গজল নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে আছে।

সংগীতের দীর্ঘ ক্যারিয়ারের কাজ ও প্রাপ্তি সম্পর্কে কী বলবেন?

আমার সলো অ্যালবামের সংখ্যা ৮। মিক্সড অ্যালবাম অনেক। মোট গানের সংখ্যা ৩০০ তো হবেই। প্রথম অ্যালবাম ‘আশীর্বাদ’ ১৯৯৭ সালে সারগাম থেকে রিলিজ হয়। অ্যালবামটির ‘পথিক’ শিরোনামের গানটি বেশ সাড়া ফেলেছিল তখন। ‘১টা চাদর হবে’ আমার পঞ্চম অ্যালবাম। গানটি বিটিভিতে প্রচারিত হওয়ার পর জনপ্রিয়তা পায়। প্রাপ্তি বলতে, কিংবদন্তি অনেক শিল্পীদের সঙ্গে কাজ করেছি। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।

গান লিখেন না কেন?

নিজের মনের কথা অন্যকে জানাতে চাই না। একান্ত বিষয়গুলো অন্যদের ভাবনা হয়ে যাওয়ার ভয়ে গান লিখি না।

স্মৃতিচারণে কোন সহকর্মীর কথা বলবেন?

আইয়ুব বাচ্চুর সঙ্গে বেশ কিছু কাজ করেছি, তিনি আমাকে ‘বুলেট সুমন’ বলতেন। আমি নাকি খুব দ্রুত গান তুলতে পারি, এই জন্যে। একবার বাচ্চু ভাইয়ের সঙ্গে একটি প্রজেক্টে কাজ চলছে। তিনি তিনটি গানের সব ইনস্ট্রুমেন্টস বাজিয়ে আমাকে ডাকলেন। বললেন, ‘বুলেট, তোমার পছন্দের বেজ গিটার তোমার সামনে বাজাব, তাই তোমাকে ডেকেছি।’ সেখান থেকে দুটি গান ‘মন জ্বলে’ অ্যালবামে রিলিজ হয়। এর মধ্যে ‘দুখী মন’ গানটি আমার খুব পছন্দের। এখনো গানগুলো শুনলে মনে হয় এইতো সেদিন বাচ্চু ভাই বাজালেন। প্রতিটি নোটের টোকা আমাকে তার স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।

জেনস সুমন নামটির বিতর্ক নিয়ে কী বলবেন?

আমার প্রথম অ্যালবাম ‘আশীর্বাদ’ থেকে নাম বিতর্ক শুরু হয়। অ্যালবামটিতে আমার নাম দেওয়া হয় জেনস। কোম্পানি তাদের মার্কেটিং সুবিধার জন্য এই কাজটি করেছিল। তখন আমার বয়সও কম। নামের রাজনীতি বুঝতে পারিনি। পরে আমি বলি, আমার নামে পরিচিত হতে চাই আমি। ‘অতিথি’ অ্যালবামে নাম দেওয়া হয় জেনস সুমন। এরপর ‘১টা চাদর হবে’ অ্যালবামে আমার নাম শুধু সুমন ব্যবহার করা হয়। জেনস বাদ দেওয়া হয়। কিন্তু এখন আবার গান করতে এসে দেখছি সবাই আমার জেনস সুমন নামটি ব্যবহার করতে চাইছে। তারা বলছে ‘এই নামে আপনাকে সবাই চেনে, আর সুমন নামের এখন অনেকেই আছে জেনস দিয়ে আইডেন্টিফিকেশন সহজ হয়।’ আমি আসলে এই ব্যাপারটা নিয়ে এখন আর সিরিয়াস না। জেনস সুমন নাকি সুমন, নামে কী আসে যায়!

Development by: webnewsdesign.com