টাঙ্গাইলের নাগরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় জাতির সূর্যসন্তানদের স্মরণ করেছে পুরো উপজেলাবাসী। আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই নাগরপুর উপজেলা চত্বরে অবস্থিত স্বারক ৭১ স্মৃতি স্তম্ভে ফুল নিয়ে উপস্থিত হন উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে নানা সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা ১৯৭১ সালে দেশের জন্মলগ্নে শহীদ হওয়া জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ সময় উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে ’৭১-এ পরাজিত শক্তির উত্তরসূরিরা এখন ‘নব্য রাজাকারের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বাঙালি সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানছে মন্তব্য করে তাদের রুখে দেওয়ার ডাক দেওয়া হয় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের কর্মসূচি থেকে। শহীদ বৃদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে উপজেলা প্রশাসন প্রথমেই সকাল ৮ টা ৫ মিনিটে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সকালে কালো পতাকা উত্তোলন, জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণের কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও ছিলো আলোচনাসভা সহ নানা কর্মসূচি।
নাগরপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুজায়েত হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম সরোয়ার ছানা বলেন, বাংলাদেশ যখন চূড়ান্ত বিজয়ের দারপ্রান্তে, তখনি পাকিস্তানি বর্বর হানাদার বাহিনী আমাদের দেশকে মেধা শূন্য করার চেষ্টায় এই বর্বরতম হত্যাকান্ড ঘটায় যা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধারা সকল শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্চছি।
নাগরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত-ই-জাহান বলেন, আমাদের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের আজ আমরা হারিয়েছি। আমরা গভীর শ্রদ্ধার সাথে তাদের স্মরণ করছি ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
উক্ত শ্রদ্ধা নিবেদন কর্মসূচীতে উপস্থিত ছিলেন, নাগরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইকবাল হোসেন, নাগরপুর থানা অফিসার ইনচার্জ সরকার আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ হূমায়ন কবির, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছামিনা বেগম শিপ্রা, নাগরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা অফিসার রোকুনজ্জামান, নাগরপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আন্জুমান আরা বেগম বিথী সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দরা।
এদিকে নাগরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগ ঐতিহাসিক এই দিনটি গভীর শ্রদ্ধার সাথে পালন করেছে। সকালে শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে উপজেলা আওয়ামীলীগ এর দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও নবনির্বাচিত সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কুদরত আলী, সম্মানিত সদস্য লক্ষীকান্ত সাহা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সবুর, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক খালিদ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক বি এম এম জহিরুল আমিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক দেলোয়ার আহমেদ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক রওশনআরা বেগম সহ বিভিন্ন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত বিজয়ের দুই দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পরিকল্পিতভাবে দেশের মেধাবী সন্তানদের হত্যা করে। বাংলাদেশ জাতি স্বাধীন হলেও পরবর্তীতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে যেনো না পারে, সেই লক্ষ্যে এই নির্মম হত্যাকান্ড ঘটনা হয়। তাদের স্মরণে প্রতি বছর ১৪ ডিসেম্বর পালন করা হয় শহীদ বৃদ্ধিজীবী দিবস।
Development by: webnewsdesign.com