ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের অষ্টজংগল সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন টিউবওয়েলের কূপ থেকে অবিরাম গ্যাস বের হচ্ছে।
বুধবার সকাল সাড়ে নয়টার সময় হঠাৎ করে বিকট শব্দে ওই কূপ থেকে গ্যাস নির্গত হতে থাকে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বিদ্যালয়ের দুটি ভবন।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিপদের আশঙ্কায় আতঙ্ক বিরাজ করছে মানুষের মাঝে। নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছে কসবা থানা পুলিশ ও স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, কসবা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ লোকমান হোসেনসহ উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
গ্যাস নির্গমনের পাশে লাল পতাকা টানিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্যাস নির্গমনের দৃশ্য দেখতে বিদ্যালয়ের আশেপাশে ভীড় জমিয়েছেন উৎসুক নারী-পুরুষ।
বায়েক ইউপি চেয়ারম্যান ও সোনার বাংলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আল মামুন ভূঁইয়া জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন টিউবওয়েলটি কাজ না করায় সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে একটি টিউবওয়েল বসানোর কাজ করছিল শ্রমিকরা। গত তিন দিনে প্রায় সাড়ে নয়শত ফুট বোরিং করার পর বালি এবং পানির লেয়ার পাওয়ায় ফিল্টার পাইপ লাগানোর জন্য পাইপ উপরের দিকে তুলছিল। আনুমানিক দেড়শত ফুট উপরে তুলার পর হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস উঠতে থাকে। প্রথমদিকে প্রায় ৬০-৭০ উপরে উঠতে থাকে গ্যাস এবং বালু ও পানি। এই অবস্থায় টিউবওয়েল মিস্ত্রিরা ভয়ে দূরে সরে যায়। গ্যাসের সাথে নিচের বালু উঠে আসার কারণে দুটি ভবন এখন হুমকির মুখে। প্রচণ্ড বেগে নিচ থেকে গ্যাস, বালু এবং পানি উঠার কারণে একটি ভবন অর্ধেক বালির নিচে চলে গেছে অপর ভবনটির মধ্যে হালকা কাঁপুনি অনুভূত হয়। বালি এবং পানিতে বিদ্যালয়ের মাঠ একাকার হয়ে গেছে। এমতাবস্তায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, শেরে বাংলা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একটি নতুন গভীর নলকূপ বসানো হয়েছিল। ওই নলকূপের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। কিন্তু বুধবার সকাল থেকে নলকূপের গর্ত থেকে দ্রুত গতিতে গ্যাস বের হচ্ছে। কোনোভাবেই তা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি এবং জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবহিত করা হয়েছে।
তিনি জানান, বিদ্যালয়ের একটি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ওই ভবনের আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্কুলের কার্যক্রম অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের চারপাশে পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
Development by: webnewsdesign.com