কেউ আইনের উর্ধ্বে নয়, এ বার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন। অন্যদিকে জনগণ যে মাত্রায় দুর্নীতি কমার প্রত্যাশা করে, সে মাত্রায় দুর্নীতি কমেনি যা ব্যর্থতা বলে মনে করেন সদ্য বিদায়ী চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
সোমবার (৮ মার্চ) দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ে তার বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দুদকে ৫ বছরের কর্মজীবন মূল্যায়নে তিনি বলেন ‘আমার চেষ্টা ছিল প্রতিষ্ঠান হিসেবে দুদককে একটি ভালো অবস্থানে নিয়ে যাওয়া। তবে আমি তৃপ্ত নই।’
দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, দুদকের নখদাঁত নেই এটি এখন প্রাচীন কথা, দুদক এখন যথেষ্ট ক্ষমতাশালী। যে আইন আছে তাতে অনেক কিছু করা সম্ভব। তবে বিব্রতের বিষয়, সব দুর্নীতি দুদকের বিষয় বলে সাধারণ মানুষ মনে করলেও সেটি সত্য নয়। দুদকের কর্মজীবনে সফলতা ব্যর্থতা মূল্যায়নের দায়ভার দেন সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ ও দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের হাতে।
এ সময় বেসিক ব্যাংকের প্রতিবেদন এত দিনেও জমা না হওয়া ব্যর্থতা কি না সে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসিক ব্যাংকের অনেক মামলা হয়েছে আরও মামলা হবে। এরই মধ্যে বেসিক ব্যাংকের রিপোর্ট দিলেও তা গ্রহণ করেনি কমিশন। শুধু চার্জশিট দেয়াই যথেষ্ট নয়। আত্মসাতের অর্থ কোথায় গেল, সেটি দেখতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের পরও আদালত আছেন, সেখানে প্রমাণ করতে হবে। কমিশন ৭৭ শতাংশ মামলায় যে শাস্তি নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে সেটি দুদকের অর্জন এবং তদন্ত প্রতিবেদনের কারণেই। একদিন এটি শতভাগ হবে। কোনো অসম্পূর্ণ প্রতিবেদন আদালতে পাঠাতে রাজি নয় কমিশন।
২০১৬ সালের ১০ মার্চ দুদক চেয়ারম্যান হিসেবে তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হন। দুদকের চতুর্থ চেয়ারম্যান হিসেবে মঙ্গলবার (৯ মার্চ) তার মেয়াদ শেষ করবেন। বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব থাকা অবস্থায় ২০০৮ সালের জুন মাসে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন ইকবাল মাহমুদ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) সচিব করা হয়। এরপর ২০১২ সালে সরকার ‘সিনিয়র সচিব’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি
করলে আরও সাতজনের সঙ্গে ইকবাল মাহমুদও ওই পদ পান। সে সময় তিনি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব। ওই বছর নভেম্বরে তিনি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পান।
এ ছাড়া একই দিনে দুদকের বিদায়ী কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত সাবেক জেলা জজ এ এফ এম আমিনুল ইসলামও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনের উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। তিনি দুদকের সক্ষমতা আরও বাড়াতে কর্মচারীদের দক্ষতা, প্রশিক্ষণ বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন।
Development by: webnewsdesign.com