দেশে সবধরনের জ্বালানি এবং শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে নতুন দামে বিক্রির খবরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের ভিন্ন ভিন্ন এলাকার লক্ষ্য করা গেছে। শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে বর্ধিত মূল্য ঘোষণা করেছে সরকার। এ খবর পাওয়ার পর মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন নিয়ে ফিলিং স্টেশনগুলো ভিড় করতে শুরু করেন গ্রাহকরা। এদিন রাতে রাজধানীর বনশ্রী এলাকার এইচটিএস ফিলিং স্টেশনে রাত ১১টায় দেখা যায় তেলের জন্য কয়েক’শ মোটরসাইকেলের দীর্ঘ লাইন। তবে, পাম্পের কর্মীরা তেল বিক্রি করছেন না। এমনকি তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।
পরে গ্রাহকদের চাপে রাত ১১টা ৩৭ মিনিট থেকে তেল দিতে বাধ্য হন পাম্প ম্যানেজার। তবে, দীর্ঘ লাইন দেখে অনেককে তেল না নিয়ে চলে যেতেও দেখা গেছে। এছাড়াও রাজধানীর আগারগাঁও তালতলার পেট্রোল পাম্পের সামনে মোটরসাইকেল, বাস, ট্রাকের লম্বা ভিড় দেখা গেছে। মিরপুর ১৪ নম্বরে শতশত মোটরসাইকেল এবং গাড়ি ফিলিং স্টেশনে ভিড় জমিয়েছে। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত ফিলিং স্টেশনগুলোতে গ্রাহকদের ভিড় দেখা গেছে। পঞ্চগড় জেলার ফিলিং স্টেশনগুলোতে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার পর থেকে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। তবে অনেকেই অভিযোগ করছেন, জেলার বিভিন্ন ফিলিং স্টেশন খবরটি জানার পর থেকে ঠিকমত তেল দিচ্ছে না। আবার কেউ অকটেন দিলেও পেট্রোল দিচ্ছে না। এদিকে পাম্প কর্তৃপক্ষ বলছে, হঠাৎ মোটরসাইকেল আরোহীদের উপচেপড়া ভিড় সামাল দিতে হিমসিম খাওয়ায় ভোক্তারা কিছুটা সমস্যায় পড়ছেন।
পঞ্চগড় করতোয়া ফিলিং স্টেশনে তেল নিতে আসা আব্দুস সামাদ বলেন, দোকান থেকে বাড়ি যাচ্ছি। মোটরসাইকেলে বেশি তেল না থাকায় ফিলিং স্টেশনে এলাম। এখানে এসে দেখি, উপচে পড়া ভিড়, কিন্তু ফিলিং স্টেশনে কেউ নেই। বিষয়টি বুঝে উঠতে পারছি না। আব্দুল হাই নামে আরেকজন বলেন, সরকারিভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাই ১০টার পর থেকে ফিলিং স্টেশনের কর্তৃপক্ষ এমনটা শুরু করেছে। কারণ আগের জমাকৃত তেল রাত ১২টার পর থেকে বেশি দামে বিক্রি করতে পারবে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় খবর নিয়ে জানা গেছে, কোনো কোনো ফিলিং স্টেশনে আবার রাত ১০টার পর থেকে ১০০ টাকার বেশি তেল দেওয়া হচ্ছে না। আবার কিছু এলাকায় ফিলিং স্টেশন বন্ধ রাখার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে শুক্রবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে ভোলা শহরের যুগীরঘোল এলাকায় এ রহমান এন্ড সন্স পাম্পে মোটরসাইকেল নিয়ে চালকরা ভিড় করে। এ সময় পাম্পের কর্মচারীরা পাম্প বন্ধ করে সটকে পড়ে। পরে তেল নিতে আসা মোটরসাইকেল চালকদের চাপে তারা পাম্প চালু করতে বাধ্য হয়। তবে প্রতিটি মোটরসাইকেলে ১০০ টাকার তেল দিতে রাজি হয়।
এছাড়াও রাত ১১টা থেকে ভিড় দেখা গেছে সাতক্ষীরার পেট্রল পাম্পগুলোতেও। রাত সাড়ে ১১টায় জেলার তালার মেসার্স মিলেনিয়াম ইউরেকা ফিলিং স্টেশনে দেখা যায়, কমপক্ষে ২০০-২৫০ মোটরসাইকেল চালক পাম্পে তেল নেওয়ার জন্য ভিড় করছেন। তবে, পাম্প কর্তৃপক্ষ ২০০ টাকার বেশি কাউকে তেল দিচ্ছে না। তেল সংগ্রহ করতে আসা একজন তালার আটারই গ্রামের সোহাগ হোসেন জানান, রাত ১২টা থেকে তেলের দাম বাড়ছে শুনেই অকটেন নেওয়ার জন্য এসেছেন তিনি। সিরিয়াল অনুযায়ী সবাইকে দিচ্ছে পাম্প কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প মূল্য বৃদ্ধি ঘোষণার পর তেল নেই বলে জানিয়েছিল। আগামীকাল আসার জন্য বাইক ও গাড়ি চালকদের জানিয়েছে। এ ঘটনায় মহাসড়ক লাগোয়া একাধিক পেট্রোল পাম্প অবরোধের খবর পাওয়া গেছে। উল্লেখ্য, বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে লিটার প্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।
Development by: webnewsdesign.com