তারাব পৌর-নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় মুক্তি পেলেন দুই কাউন্সিলর প্রার্থী

রাতে আটক, সকালে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে কোর্টে চালান, দুপুরে জামিন

বুধবার, ১৩ জানুয়ারি ২০২১ | ১০:১২ অপরাহ্ণ

তারাব পৌর-নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় মুক্তি পেলেন দুই কাউন্সিলর প্রার্থী
কাউন্সিলর প্রার্থী রুহুল আমিন ও আনোয়ার হোসেন
apps

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভা নির্বাচনে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৬৫ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পিকআপ ভ্যান ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। তিনটি ব্যক্তিগত গাড়ি ও ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নোয়াপাড়া এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (ডালিম মার্কা) এবং রুহুল আমিন ফরাজীর (উটপাখি মার্কা) সমর্থকদের মধ্যে ওই সংঘর্ষ ঘটে। রাতে ঘটনাস্থল থেকে কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেন, রুহুল আমিন ফরাজীকে আটক করা হয়েছে। এব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা এইচএম জসিম উদ্দিন বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেন এবং রুহুল আমিন ফরাজী পাল্টাপাল্টি দুইটি মামলার করেছেন। তাদের দুইজনকে বুধবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে। দুপুরে কোর্ট থেকে দু’জনই জামিন পেয়েছেন বলেও শুনেছি।

রূপগঞ্জ থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন , দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে আটক করে রাতে থানায় রাখা হয়। তাদের বুধবার সকালে নারায়ণগঞ্জ কোর্টে চালান করে দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে রহুল আমিন ফরাজীর সমর্থকরা এলাকায় উটপাখি মার্কার মিছিল নিয়ে বের হয়। অন্যদিকে আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের সমর্থকরা ডালিম মার্কার মিছিল নিয়ে বের হয়। এসময় দুই প্রার্থীর সমর্থকরা মুখোমুখি হলে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পরিণত হয়।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৬৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স, বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরো ৬ জনকে মুমূর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্বাচনী এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ৬৫ জন আহত হয়। এদের মধ্যে টেক্সটাইল শ্রমিক মুজিবুর রহমানের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। অন্য আহতরা হলেন ইউসুফ (৩৩), তানভীর (৩৫), অমি (২৫), আলী মঞ্জুর (৪৫), হাবিব (৫০), খোরশেদ (৩৫), জোবায়ের (২৫), জাহাঙ্গীর (৫৫), মতিন, আলমগীর (৩১) হিমেল (২৪), রাসেল (১৯), সিদ্দিক (২৮) , রকিবুল ২৭), ইমরান (১৯),সাদ্দাম (৩৩), মিয়াজান (২২), আরজ আলী (৪৮), সরাফত (৩৫), রাজ (২৫), শাহেদ (৩৩), তারিক (২৪), মোবারক (৩২), জসিম (৩৭), ইলিয়াছ (৩৮), সোবহান (৪১) ও মোমেন (৪৭)সহ ৬৫ জন আহত হয়।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ‘গ’ সার্কেল মাহিন ফরাজী, নারায়ণগঞ্জ জেলা নির্বাচন অফিসার ও তারাব পৌর নির্বাচন রিটার্নিং অফিসার মতিয়ুর রহমান, রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আফিফা খান, রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

কাউন্সিলর প্রার্থী রুহুল আমিন ফরাসী বলেন, তাঁর পূর্ব নির্ধারিত গণসংযোগে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আনোয়ার হোসেনের নিয়োজিত বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দিয়ে আমার কর্মী সমর্থকদের উপর দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে সুপরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। আমার কর্মী সমর্থকদের উপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।

প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার নির্বাচনী গণসংযোগে প্রতিপক্ষের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। নির্বাচনী মাঠে পরাজিত হওয়ার আশঙ্কায় তারা এ হামলা চালিয়েছে।

জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ুর রহমান জানান, ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। যাঁরা এ অপ্রীতিকর ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Development by: webnewsdesign.com