রাজশাহীর তানোরে এক কলেজছাত্রকে ৩ দিন ধরে ঘরে আটকে রেখে জোরপূর্বক বিয়ের আয়োজন করেছে ১৬ বছরের এক তরুণী। তবে, তাঁর সব আয়োজন বিফলে গেছে। অবশেষে মুচলেকা দিয়ে বিয়ে বন্ধ করা হয় বলে জানিয়েছেন তানোর পৌরসভার প্যালেন মেয়র আরব আলী। (১১ ফেব্রুয়ারী) সন্ধ্যায় চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে তানোর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আকচা ভক্তিপুর গ্রামে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত (৯ ফেব্রুয়ারী) বুধবার বিকেলে কলেজ পড়ুয়া ছাত্র মারুফ হোসেন (১৮) তানোর পৌর এলাকার আকচা ভক্তিপুর মহল্লায় বন্ধু রাকিবের বাড়িতে বেড়াতে আসে। খবর পেয়ে রাকিবের বাড়িতে ওই প্রেমিকা তরুণী মারুফের সঙ্গে দেখা করতে যায়।
পরে ওই তরুণী প্রতিবেশি দ্বারা কৌশলে তাকে তুলে নিয়ে তাঁর বাড়িতে আটকে রাখে বলে জানায় মারুফ। মো: তোফাজ্জুল হোসেনের ছেলে মারুফ তানোর উপজেলার পাঁচন্দর ইউপির কচুয়া মোহাম্মাদপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামে।
মারুফের পরিবারের অভিযোগ , ঘটনার দিন বিষয়টি নিয়ে থানা পুলিশকে জানালেও থানা থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মাধ্যমে সুরাহার জন্য বলা হয়। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মুনজুর রহমান এমন সুযোগে ওই তরুণীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কলেজছাত্র মারুফকে বুধবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ওই তরুণীর ঘরে বন্দি রাখে।
পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় তানোর পৌর এলাকার আকচা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কাউন্সিলর মুনজুর রহমানের নেতৃত্বে সালিশে ওই তরুণীকে বিয়ে করার সম্মতি দেয় কলেজ ছাত্র মারুফ। এ অবস্থায় থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে উভয়পক্ষের মুসলেকায় বিয়ের আয়োজন বন্ধ করা হয়। এসময় পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের জানানো হয়, উভয়ের বিয়ের উপযুক্ত বয়স হয়নি। তাই এ বিয়ে বন্ধ করা হলো।
তানোর পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিএনপি নেতা মুনজুর রহমান জানান, বিয়ে দেবার চেষ্টায় ছিলাম। প্রশাসন ম্যানেজ করে সবকিছু গোছানো ছিল। আপনি এভাবে কলেজ ছাত্র মারুফকে ৩ দিন ধরে আটকে বিয়েতে বাধ্য করতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, আমরা ওই ছেলেকে আটকে বিয়ে দেবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পুলিশের ভূমিকার জন্য বিয়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। আপনারা সাংবাদিক যত খুশি লিখেন বলেন এই কাউন্সিলর।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে সুরাহার জন্য কাউন্সিলর মুনজুর রহমান দায়িত্ব নিয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা ছাড়া কোন কাউন্সিলর একজন ছাত্রকে ৩ দিন ধরে এভাবে আটকে রাখতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, আমার বদলি হয়ে গেছে, বিকেলে থানা ছেড়েছি। পরে উপর মহলের নির্দেশে বিয়ে বন্ধ করা হয়েছে। তারপরও লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই পরবর্তী ওসি আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে জানান ওসি রাকিব।
Development by: webnewsdesign.com