স্ত্রী হিসেবে দাবি আদায়ের জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেও কোন সুরহা পাচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেছেন এক গৃহবধু।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় চত্বরে এমন অভিযোগ করেন গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায়।
গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার পশ্চিম চিকনমাটি গ্রামের ঝাড়ুরামের মেয়ে এবং সে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শুখানপুকুরী ইউনিয়নের তেওয়ারীগাঁও গ্রামের ধীরেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে কালিদাস রায়ের স্ত্রী।
গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় অভিযোগ করে বলেন, ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্কে কালিদাস রায়ের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে আমরা দুজন ডোমারের পশ্চিম চিকনমাটি পানাতিপাড়া গ্রামের একটি ভাড়া বাসায় থাকতাম।
তিনি বলেন, সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আমার স্বামী উত্তীর্ণ হয়। এরপর তিনি গত ৪ জানুয়ারি সকালে আমার কাছে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং বাবার কাছ থেকে টাকা এনে দিতে চাপ দেয়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করলে তিনি আমাকে বেধরক মারপিট করে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পরিবারের লোকজন মিমাংশা না হওয়ায় গত ২ ফেব্রুয়ারি গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় বাদী হয়ে নীলফামারীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি যৌতুক ও নির্যাতন মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্বামী কালিদাস রায়কে আসামী করা হয়।
এদিকে গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় তার স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে স্বামী কালিদাস রায়ের যোগদানপত্র স্থগিত করার দাবি জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। জেলা প্রশাসক অভিযোগের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় বলেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি ডোমার থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে এসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদের অফিসে উনার সাথে দেখা করে কথা বলি। তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন সহকারী শিক্ষক পদে সদ্য উত্তীর্ণ আমার স্বামী কালিদাস রায়ের যোগদান পত্র স্থগিত করা হবে। এরপর আবারও ৫, ১২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদের দেখা করলে তিনি একই আশ্বাস দেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদের সাথে দেখা করলে তিনি জানিয়ে দেন চাকরিতে আমার স্বামীর যোগদানপত্র স্থগিত হচ্ছে না। আজ আমার স্বামীকে যোগদানপত্র দেয়া হয়।
গৃহবধু শ্রী মতি ভগবতী রায় বলেন, আমার স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুক ও নির্যাতন আইনে মামলা চলমান রয়েছে; সে কেমন করে যোগদানপত্র পায়? সে যদি যোগদানপত্রই পাবে তাহলে কেন আমাকে শিক্ষা কর্মকর্তা বেশ কয়েকদিন যাবৎ আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছিলেন?
শির্ক্ষা কর্মকর্তার কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন সুরহা পায়নি। আমি আমার স্ত্রীর মর্যাদা চাই এবং আমার স্বামীর শাস্তি চাই। এজন্য প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সমাজের সুশীল সমাজ, প্রশাসনের সহযোগিতা চান তিনি।
অভিযুক্ত স্বামী কালিদাস রায়ের মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, আদালত থেকে আদেশ না পাওয়ার পর্যন্ত আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারব না। আদাল থেকে আদেশ পেলে আমরা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। গৃহবধুকে আশ্বাস দেয়া প্রশ্নে তিনি বলেন, উনি হয়তো শুনতে ভুল করেছেন; আমার পক্ষ থেকে এ ধরনের কোন আশ্বাস দেয়া হয়নি।
Development by: webnewsdesign.com