জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই ফিলিস্তিনি সংকটের মূল কারণ খুঁজে বের করে তার সমাধানসহ ইসরায়েলি আগ্রাসনের অবসানে সত্যিকারের প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। ইসরায়েল যেন সব আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইন এবং জাতিসংঘ রেজুলেশন ২৩৩৪সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য জাতিসংঘ রেজুলেশন যথাযথভাবে প্রতিপালন করতে সম্মত হয় তা আমাদেরই নিশ্চিত করতে হবে।
বুধবার (১ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন প্রশ্নে আয়োজিত এক প্লেনারি সভায় এ কথা বলেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী দ্বি-জাতি সমাধান কাঠামোর আওতায় পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন, কার্যকর ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে ফিলিস্তিন জনগণের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটুট ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর মাধ্যমে বাড়িঘর ও অবকাঠামো ভেঙে ফেলা, দখল, বহিষ্কার, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি এবং ফিলিস্তিনিদের রক্তপাত ঘটানোর কারণে ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। ইসরাইলের এ রকম কর্মকাণ্ড জাতিসংঘ রেজুলেশন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও মানবিক আইনের প্রতি সুস্পষ্ট অবজ্ঞা প্রদর্শন।
বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার ঘৃণ্য সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে এবং অধিকৃত ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সংঘটিত নৃশংস অপরাধের অবশ্যই জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি এসব অপরাধ তদন্তের জন্য স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত কমিশনের চলমান কার্যক্রমকে স্বাগত জানান। এছাড়া রাষ্ট্রদূত ফাতিমা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এ বিষয়ক অগ্রগতিকেও স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য গঠিত রিলিফ সংস্থা আনরোয়া (টঘজডঅ) এর কাজের প্রশংসা করেন এবং কোভিড-১৯ মহামারি থেকে পুনরুদ্ধারসহ ফিলিস্তিনিদের জরুরি মানবিক চাহিদার সমাধান করার উপর জোর দেন। আনরোয়াকে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ফিলিস্তিন প্রশ্নে জাতিসংঘে দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা চলমান থাকার অর্থ হচ্ছে ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতার একটি স্পষ্ট অনুস্বাক্ষর। জাতিসংঘে ফিলিস্তিনকে তার ন্যায্য স্থান দেওয়াসহ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি সমস্যার একটি ন্যায়সঙ্গত, দীর্ঘস্থায়ী, ব্যাপকভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধান নিশ্চিতে কাজ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পুনরায় আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
Development by: webnewsdesign.com