রাজশাহীর চারঘাটে জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি ও ভুল সংশোধনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদ ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তারা নিজেরা ইচ্ছেকৃত ভুল করে ভুল সংশোধনের নামে সাধারন মানুষের কাছে থেকে বিপুল টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
জানা যায়, চারঘাটের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম নিয়ে অনেক আগে থেকেই অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত টাকা দিলে একদিনেই পাওয়া যায় জন্ম নিবন্ধন সনদ। অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় কাউকে দিনের পর দিন যেতে হয়েছে সংশ্লিষ্ট অফিসে। তার পরেও শেষ হয় নি হয়রানি। বিভিন্ন অজুহাতে ও ভুল তথ্য টাইপ করার জন্য সময় সাকুল্যে লেগেছে মাস খানেক। আবার উদ্যোক্তারা ইচ্ছে করে ভুল করে পরবর্তীতে সংশোধনীর মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও করেছেন অনেকে। তেমনই ভুক্তভোগীদের একজন চারঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের ০৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিনু আরা বেগম।
তিনি চাঁদপুর কাঁকড়ামারী গ্রামের মহসেন আলীর স্ত্রী। তার মেয়ে রানু খাতুনের জন্ম নিবন্ধন সনদের ভুল সংশোধনেরর জন্য দিনের পর দিন ইউনিয়ন পরিষদ চত্ত্বরে ঘুরেছেন তিনি।
মিনু জানান, তার মেয়ের জন্ম সনদে বয়সের সালটা ভুল হয়। তিনি সেটা সংশোধনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যান। কিন্তু সেখানকার উদ্যোক্তা শরীফুল ইসলাম শফিক তাকে প্রায় ১৫ দিন যাবৎ ঘুরিয়ে হয়রানি করায়।পরবর্তীতে শফিক তার কাছে তিন হাজার টাকা দাবী করে সনদ সংশোধনের জন্য। তিন হাজার টাকা না দিলে জেলা প্রশাসকের কাছে গেলেও বয়স সংশোধন হবেনা বলে জানায় শফিক।
এক পর্যায়ে শফিককে ২৩’শ টাকা দিলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকেই সনদের বয়স সংশোধন করে দেয় শফিক। জন্ম সনদ অনেক প্রয়োজন, সেজন্যই এতো টাকা দিয়ে জন্ম সনদ সংশোধন করিয়েছেন বলে জানান মিনু আরা।তবে তিনি এ নিয়মের বিচার দাবী করেছেন তিনি।
শুধু মিনু আরা বেগম নন। এরকম আরো অনেকেই চারঘাট ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা শরীফুল ইসলাম শফিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। শুধু অতিরিক্ত সনদ নিবন্ধন ফি ছাড়াও নিজ ইচ্ছেতে সনদপত্রে ভুল করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। তবে মিনু আরা বেগমের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শরীফুল ইসলাম শফিক। তিনি মিনু আরা নামে কাউকে চেনেন না বলে দাবী করেছেন।
তিনি বলেন,আমি কারও কাছে থেকে টাকা নিইনি জন্ম সনদ সংশোধনের জন্য। কে বা কারা নিয়েছে এ বিষয়ে কিছুই জানিনা। আর আমার বিরুদ্ধে তোলা এসব অভিযোগ সবই অসত্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুর রহিম বলেন, এ সকল অভিযোগের বিষয়ে আমি অবগত না। তবে আমি সব সময়ই সবাই সচেতন করেছি কেউ যেনো নিবন্ধন ফি ব্যাতিত কাউকে কোনো টাকা না দেয়। তারপরও মাঝে মাঝেই অনেকে এসে এরকম অনিয়মের কথা বলেন।
এ ব্যাপারে চারঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, আমিও এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি।আমি বিষয়টা ইউএনও কে জানাবো। আমার ইউনিয়নের কেউ ভোগান্তির শিকার হোক সেটা আমি চাইনা।
Development by: webnewsdesign.com