বরিশালে এক কিশোরীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে জনৈক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। বরিশাল সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীকে গত রোববার শহরের নথুল্লাবাদ এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় দুই সন্তানের জনক জেলা ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বনি আমিন। ওইদিন রাতভর কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের একটি আবাসিক হোটেলে কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণ করে সে। পরে সোমবার রাতে ঝালকাঠি জেলা শহরের এক আত্মীয়র বাড়িতে তাকে পৌঁছে দিয়ে পালিয়ে যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইস্যু ক্লার্ক বনি আমিন। রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন বিমানবন্দর থানা পুলিশ কিশোরীকে উদ্ধার করে বরিশালে নিয়ে আসে। তবে ঘটনার পর থেকে ছাত্রলীগ নেতা আত্মগোপন করায় তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে- রোববার ক্লাস শেষে বাড়ি উজিরপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়ে শহরের নথুল্লাবাদ পৌছানোর পরে কিশোরীকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা বনি আমিন। পরবর্তীতে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাকে কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের একটি আবসিক হোটেলে নিয়ে রেখে রাতভর ধর্ষণ করে। ঘটনার দিন রাতে কিশোরীর মা খাদিজা বেগম বরিশাল বিমানবন্দর থানায় একটি অপহরণ অভিযোগ দেন। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে নামার খবরটি প্রকাশ পেলে বনি আমিন ঝালকাঠি জেলা শহরের বাসিন্দা কলেজছাত্রীকে তার আত্মীয়র বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
একটি সূত্র জানায়- শহরের গণপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে বনি আমিনের ভাতিজির সাথে বরিশাল সরকারি মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো কিশোরী। এই সুবাদে তাদের বাসায় যাওয়া আসায় পরিচিত হওয়ার একপর্যায়ে বনি আমিনকে চাচা বলে সম্বর্ধন করতো কলেজছাত্রী।
কিশোরীর পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়- কিশোরী ক্লাস শেষে উজিরপুরে যাবে এমন ধারণা অনুমানে নিয়ে রোববার একটি প্রাইভেটকার নিয়ে নথুল্লাবাদে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগ নেতা। এবং তাকে সেলফোনে কল করে। কিছুক্ষণ পরে কলেজছাত্রী সেখানে পৌছালে বনি আমিন তাকে গাড়িতে ওঠার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু এতে সে রাজি না হলে একপর্যায়ে জোরপূর্বক তোলা হয় এবং গাড়িটি দ্রুত চালিয়ে ত্যাগ করে। ওইদিন রাতে কিশোরীকে কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে রেখে ধর্ষণ করে এবং পরদিন অর্থাৎ সোমবার রাতে তাকে ঝালকাঠিতে পৌঁছে দেয়।
এই ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ বিন আলম বরিশালটাইমসকে জানান, কিশোরীকে উদ্ধারে করে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পরে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ। সংগঠনটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন- কোন ব্যক্তি বিশেষের দায় বাংলদেশ ছাত্রলীগ বহন করবে না। এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হবে।’
Development by: webnewsdesign.com