গৃহবধূ মুনমুনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য, দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি তিন মামলা

বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি ২০২০ | ৬:০৬ অপরাহ্ণ

গৃহবধূ মুনমুনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য, দু’পক্ষের পাল্টাপাল্টি তিন মামলা
apps

ঢাকার ধামরাইয়ের বালিথা গ্রামের মুনমুন নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। সে আত্মহত্যা করেছে না তাকে হত্যা করা হয়েছে এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গত এক মাসে পাল্টাপাল্টি তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার মুনমুনকে তার সৎ মা শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে তার স্বামী আরিফুল ইসলাম আজাহার বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মুনমুনের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশ জানিয়েছেন।

 

 

 

 

 

 

পুলিশ ও স্বজনদের কাছ থেকে জানা গেছে, ধামরাই পৌরসভার কুমড়াইল মহল্লার আবদুল লতিফের মেয়ে মুনমুনের সঙ্গে একই উপজেলার সুতিপাড়া ইউনিয়নের বালিথা গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে আজাহারের সঙ্গে প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের ৮ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর সকালে গৃহবধূ মুনমুন তার ৮ বছরের ছেলেকে স্কুলে রেখে বাড়ি ফেরার পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। ওই সময় তাকে গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি লুৎফর রহমান মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে স্ত্রীকে খুঁজতে থাকেন স্বামী আরিফুল ইসলাম আজাহার। ওইদিন বিকেলে জানতে পারেন তার স্ত্রী মানিকগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সেখানে স্ত্রীকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন আজাহার। পরের দিন মুনমুনকে নির্যাতন করা হয়েছে মর্মে তার (মুনমুন) স্বজনরা স্বামী আজাহারকে বেদম মারপিট করে গুরুতর আহত করে। এরপর আজাহারকে প্রথমে নেওয়া হয় মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে মুনমুনকে ভর্তি করা হয় ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। চিকিৎসা শেষে ধামরাই পৌরসভার কুমড়াইলে বাবার বাড়ি গিয়ে গত ১৪ ডিসেম্বর সৎ মায়ের ঘরে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে মুনমুন। ওই সময় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তার স্বামী আজাহার। মুনমুনের এ আত্মহত্যার ঘটনায় স্বামী আরিফুল ইসলাম আজাহার, শ্বশুর শাহজাহান, শাশুড়ি মাজেদা বেগম, ননদ শাহানাজ ও ননদের জামাই আবদুর রশিদকে আসামি করে নির্যাতন ও আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা করে মুনমুনের ভাই আলামিন। মামলায় শ্বশুর ও শাশুড়িকে ওইদিনই গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। তারা ১৪ দিন হাজতবাস করে জামিনে মুক্ত হন। শাজাহান জামিন পেয়ে তার ছেলে আজাহারকে মারধরের অভিযোগ এনে নিহত মুনমুনের ভাই আলামিন, বাবা আবদুল লতিফসহ চারজনের নামে আদালতে মামলা করেন। এরপর আজাহার তার স্ত্রী আত্মহত্যা করেনি-তাকে তার সৎ মা নিজ ঘরে শ্বাসরোধে মেরে ফেলেছে অভিযোগ এনে গত মঙ্গলবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত ধামরাই থানাকে মামলাটি নেওয়ার নির্দেশ দেন।

 

 

 

 

 

আজাহারের দাবি, তার স্ত্রীকে সৎ শাশুড়িসহ কয়েকজন মিলে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে পুনরায় ময়নাতদন্তের দাবি জানান তিনি।

এদিকে, নিহত মুনমুনের ভাই অন্য মামলার বাদী আলামিন সাংবাদিকদের জানান, তার বোনকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় সে আত্মহত্যা করেছে।
ধামরাই থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, ‘মুনমুনের নিহতের ঘটনায় থানায় একটি ও আদালতে দুটি মামলা হয়েছে। প্রতিটি মামলার তদন্ত চলছে। প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।

Development by: webnewsdesign.com