কোরবানির গরু জবাই করার সময় হুজুরকে সহায়তা করতে গিয়ে হাত ফসকে রগ কেটে গেছে রাজধানীর মহাখালী এলাকার সোহেল মাহমুদ নামে এক তরুণের। এখন ওই তরুণ পঙ্গু হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে।
দ্রুত অপারেশন করতে হবে, তা নাহলে তার হাত কবজি থেকে কেটে ফেলতে হবে।
বুধবার (২১ জুলাই) নগরীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) সোহেলসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তি চিকিৎসা নিচ্ছেন। কারোর হাতের কবজির রগ কেটে গেছে ও গরু মাংস কাটতে গিয়ে কারোর হাতের আঙুল কেটে গেছে। ছুরি ফসকে অনেকের আবার পাও কেটে গেছে।
সোহেল বলেন, গরু ধরতে গিয়েছিলাম। গরু হঠাৎ মাথা নাড়া দিয়ে উঠে। এ সময় হুজুর গরু গলা কাটার বদলে আমার হাতে ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন। এতে আমার হাতের রগ কেটে গেছে। এখন অপারেশন করতে হবে।
নিটোরের অপারেশন থিয়েটারের সামনে হাত নিয়ে কাতরাচ্ছেন বশির আহমেদ। তিনি খিলগাঁও এলাকা থেকে এসেছেন। মাংস কাটতে গিয়ে তার হাতের আঙুলে কোপ মেরেছেন তিনি। প্রথমে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পরে হাতের রগ কেটে যাওয়ার কারণে তাকে ঢামেক হাসপাতাল থেকে নিটোরে পাঠানো হয়েছে।
বশির আহমেদ বলেন, প্রতিবছর নিজের কোরবানির গরু নিজেই প্রস্তুত করি। কখনও এমনটা হয়নি। এবার মাংস কাটতে গিয়ে অসাবধানতাবশত নিজের হাতে কোপ মেরেছি।
মোহাম্মদপুর বসিলা এলাকায় থাকেন সাইমম সুমন। গরু ধরতে গিয়ে হুজুর অসাবধানতাবশত তার হাতে ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন। এতে তার তিনটা আঙুল জখম হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটা আঙুল পড়ে গেছে। বাকি দুটি আঙুলের ৮০ শতাংশ কেটে গেছে। কোনোভাবে চামড়ার সঙ্গে আঙুল ঝুলে আছে।
সুমনের বড় ভাই কবির আহমেদ বলেন, জবাই করার সময় গরু হঠাৎ জোরালোভাবে ঝাঁকি মারে। এ সময় হুজুর ঝুক সামাল দিতে পারেননি। মাদ্রাসার বাচ্চা পোলাপান হাতের ওপরে ছুরি চালিয়ে দিয়েছেন।
বাড্ডা নতুনবাজার থেকে নিটোর অপারেশন থিয়েটারের সামনে অপেক্ষা করছেন মইন উদ্দিন। কোরবানির গরুর চামড়া প্রস্তুত করার সময় ছুরি ফসকে হাতের রগ কেটে গেছে তার।
সরেজমিন ঘুরে দেখো গেছে, সকাল ৮টা থেকে নিটোরে রোগী আসতে শুরু করে। অনেকের হাতের রগ কেটে গেছে। অনেকের অপারেশন করতে হচ্ছে। কেউ আবার ভর্তি থাকছেন হাসপাতালে।
নিটোরে অপারেশন থিয়েটারে কর্তব্যরত নিটোরের রেসিডেন্ট ডা. তপণ দেবনাথ বলেন, সকাল থেকে অসংখ্যা রোগীর অপারেশন করতে হচ্ছে। এদের মধ্যেই অধিকাংশ মৌসুমি কসাই। ছুরি ফসকে অধিকাংশের হাতের রগ কেটে গেছে। অনেকের হাতের আঙুল কেটে ফেলতে হচ্ছে। অনেক রোগীকে আবার ভর্তি করতে হচ্ছে, কারণ রগ কাটলে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিতে হয়।
Development by: webnewsdesign.com