নগরীর অপরাধ জগতে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছেন দুই সহোদর, যারা দৈনিক প্রায় ১০ লাখ টাকার মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। শহীদুল ইসলাম বুইস্যা (২১ মামলার আসামি) ও তার ভাই আয়ুব আলী (২০ মামলার আসামি) – এই দু’জনের হাতেই ছিল মাদক, অস্ত্র ও চাঁদাবাজির রমরমা কারবার। এই সাম্রাজ্যের রাশ টেনে ধরেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।
গতকাল রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে বহদ্দারহাট ফরিদার পাড়া থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছেন ছোট ভাই আয়ুব আলী।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে তাদের বিলাসবহুল মাদক ব্যবসার চিত্র। এই দুই সহোদরের মাদকের স্পটে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ টাকার ইয়াবা বিক্রি হতো, যা দ্রুত গণনা করার জন্য ব্যবহার করা হতো টাকা গণনার মেশিন। পুলিশের গতিবিধি নজরে রাখতে তাদের আস্তানা ও মাদক বিক্রির স্পটের আশেপাশে লাগানো ছিল ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে প্রতিদিন সন্ধ্যায় ইয়াবা কেনার জন্য সেবনকারীরা লাইনে ভিড় করতো। প্রতি পিস ইয়াবা বিক্রি হতো ২২০ টাকায়।
গত ৯ ও ১০ অক্টোবর শহীদুলের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশ ইতালির তৈরি পিস্তলসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও ইয়াবা উদ্ধার করে। এ পর্যন্ত শহীদুলের ৩৩ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ গতকাল অস্ত্রসহ ধরা পড়েছে তার ভাই, ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক আয়ুব আলী।
গ্রেপ্তারকৃত সহযোগী আজাদ পুলিশকে জানান, মাদক স্পট নিয়ন্ত্রণে রাখতে শহীদুল অস্ত্র মজুত করতেন। মাদকের স্পট নিয়ন্ত্রণ নিয়ে অন্য সন্ত্রাসী ইসমাইল হোসেন টেম্পুর সঙ্গে তাদের নিয়মিত গোলাগুলি হতো।
মাদক বিক্রির স্পট দেখাশোনার জন্য সাতজনকে দৈনিক এক হাজার টাকা বেতনে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
“শহীদুল ইসলাম বুইস্যার বিরুদ্ধে ২১টি ও তার ভাই আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে ২০টি মামলা রয়েছে। ২০২৩ সালের মে মাসে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েও তিন মাসের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে শহীদুল ফের অপরাধে জড়ায়। তার ৩৩ সহযোগীকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত শহীদুলকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।”
দুই সহোদর ভোলা জেলার দৌলতখান গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তারা পাঁচলাইশ থানার বদিউল আলম গলির একটি ভবনে ভাড়া থাকতেন। বড় ভাই শহীদুল মূলত চাঁদাবাজি ও অস্ত্রের কারবার দেখতেন, আর ছোট ভাই আয়ুব আলী মাদক বিক্রির স্পট, টাকা-পয়সার হিসাব এবং সামগ্রিক ব্যবসা দেখভাল করতেন।
Development by: webnewsdesign.com