অল্প সময়ে কোটিপতি হতে গার্মেন্টস কর্মী থেকে হয়ে যায় অপহরণকারী চক্রের সদস্য। বিকাশে টাকা লেনদেন করতে গিয়ে র্যাবের জালে ধরাও পড়ে চার গার্মেন্টস কর্মী।
গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায় অপহরণকারী চক্রের এই ৪ সদস্যকে আটক করে র্যাব-১। এ সময় অপহৃত শাহরিয়া ইসলাম আরাফকে (১৬ মাস) মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলো- মোসা. জেরিন ইশরাত জুলি (২২), তারিন নুশরাত তুলি (১৬), মো. আমিনুল ইসলাম (২৯), মো. সুমনকে (৩০)। তাদের কাছ থেকে একটি স্বর্ণের কানের দুল, চারটি মোবাইল ফোন ও এক হাজার ৮৭০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
রোববার দুপুরে র্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল (সিপিস) আব্দুল্লাহ আল- মামুন উত্তরার র্যাব-১ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে অপহৃত শিশু শাহরিয়া ইসলাম আরাফকে অপহরণের রোমহর্ষক বর্ণনা দেন।
তিনি জানান, গাজীপুরের শরিফপুরে মো. আশরাফ আলীর বাসা ভাড়া নেয়ার উদ্দেশ্যে যায় প্রতারকচক্র। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ২ দিন পর অর্থাৎ শনিবার জুলি ও তার ছোট বোন তুলি উপস্থিত হয়। এসময় তাদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ বাসা ভাড়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। আলাপচারিতার এক ফাঁকে জুলি ও তুলি তাদের সঙ্গে নিয়ে আসা চেতনানাশক ওষুধ মিশ্রিত জুস কৌশলে আশরাফ ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের খাওয়ায়। ওই জুস খেয়ে পরিবারটির সবাই অচেতন হয়ে পড়লে জুলি ও তুলি ওই বাড়ির শিশু আরাফকে অপহরণ ও নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল চুরি করে পালিয়ে যায়।
এরপর ওইদিন বিকেলে অপহরণকারীরা শিশু আরাফের মায়ের মোবাইল ফোনে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে শিশু আরাফের কিডনি বিক্রি ও হত্যার হুমকি দেয়া হয়।
আরাফের পরিবার অপহৃত শিশু সন্তানকে উদ্ধারের জন্য র্যাব-১ এর কাছে আইনগত সাহায্য কামনা করলে সঙ্গে সঙ্গে অপহরণকারীদের খুঁজে বের করতে র্যাব-১ দ্রুততার সঙ্গে ছায়া তদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গাজীপুরের সাইনবোর্ড এলাকায় বিকাশে টাকা লেনদেনের সময় অপহরণকারী চক্রের ২ সদস্য জুলি ও তার বোন তুলিকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাদের দেয়া তথ্যে অপর দু’জন আমিনুল ও সুমনকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর সাইনবোর্ড এলাকার একটি ফ্ল্যাটের পরিত্যক্ত গোপন কক্ষ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় অপহৃত শিশু আরাফকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, তারা পেশায় গার্মেন্টস কর্মী। তাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল যেকোনো উপায়ে বিপুল টাকা উপার্জন করে গাজীপুর শহরে একটি ফ্ল্যাট বাসা ক্রয় করে সুন্দরভাবে জীবন-যাপন করা। তাদের এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য তারা শিশুটিকে অপহরণ করেছে। তারা ধনী পরিবারের শিশুকে টার্গেট করে থাকে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণ, চুরি ও ছিনতাইসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজে জড়িত।
এ বিষয়ে গাজীপুর গাছা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
Development by: webnewsdesign.com