কোচিও ছেড়ে আবারও ফুটবলের মাঠে

বুধবার, ১৬ নভেম্বর ২০২২ | ১:০৭ অপরাহ্ণ

কোচিও ছেড়ে আবারও ফুটবলের মাঠে
apps

ম্যাচ শেষে সতীর্থ এক খেলোয়াড়কে জড়িয়ে ধরে বলছিলেন, ‘কেমন খেলেছি আমি?’ ততক্ষণে মিরোনা খাতুনকে প্রশংসাবৃষ্টিতে ভেজাতে শুরু করেছেন সতীর্থরা। আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে নারী ফুটবল লিগে খেলতে নেমে ইতিহাস গড়েছেন ফুটবলার মিরোনা খাতুন।

খেলা ছেড়ে ছয় বছর আগে কোচিংয়ে নাম লিখিয়েছিলেন। বর্তমানে বাফুফের তালিকাভুক্ত কোচ মিরোনা। সেই মিরোনাই কিনা আজ মাঠে নামলেন আতাউর রহমান ভূঁইয়া কলেজ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে।

সারাক্ষণ কোচিং নিয়ে থাকলেও খেলার জন্য ফুটবল মাঠ ভীষণ টানে মিরোনাকে। ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা ৯ বছর জাতীয় দলে খেলেছেন। ওই সময়ে তাঁর সতীর্থ সাবিনা খাতুন এখনো সমানে দাপটে খেলে চলেছেন। এবারের সাফ জয়ে সাবিনার ছিল বড় ভূমিকা। সেই সাবিনাকে দেখেই আবারও মাঠে ফেরার ইচ্ছা মিরোনার।

ম্যাচ শেষে মাঠে দাঁড়িয়ে মিরোনা বলছিলেন, ‘ফুটবল খেলতে খুব ভালো লাগে আমার। আসলে কোচিংয়ের চেয়ে খেলাটাই বেশি উপভোগ করি। অনেক দিন ধরেই ইচ্ছা ছিল আবারও মাঠে নামব। বাংলাদেশ দল যখন সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়, তখন দেখলাম, ওই দলে খেলছে সতীর্থ সাবিনা। ওর খেলা দেখেই আমার খুব ইচ্ছাটা প্রবল হয়ে ওঠে। মনে হয়েছে যদি সুযোগ পাই, আমিও খেলব। এবার সেই সুযোগ পেয়েছি।

মিরোনা এএফসির ‘সি’ ও ‘বি’ লাইসেন্স কোর্স করেছেন। দেশের পেশাদার ফুটবলের পুরুষ দলের প্রথম নারী কোচ হয়ে ইতিহাসের পাতায় নাম লেখান ২০১৯ সালে। চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সেবার ঢাকা সিটি এফসির কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়িয়েছিলেন মিরোনা।

নিয়মিত কোচিং করালেও ফুটবলারদের মতো ফিটনেসটা আগের মতো নেই। আজ মাঠে অবশ্য কোচ গোলাম রায়হান তাঁকে খেলিয়েছেন ম্যাচের শেষ দিকে মিনিট দশেক। মাঠে নামতে পেরেই উচ্ছ্বসিত মিরোনা, ‘নিজের খেলায় আমি খুশি। ওদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। এই মেয়েদের অনেক গতি। এ ছাড়া অনেক দিন বিরতি পড়েছে আমার খেলায়। তাই ওদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খেলাটা কঠিন ছিল। মাত্র এক সপ্তাহ ট্রেনিং করার সুযোগ পেয়েছি। তারপরও মাঠে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

পারিশ্রমিক নিয়ে মোটেও ভাবছেন না মিরোনা। বরং খেলার সুযোগ পেয়েই খুশি, ‘আমার খেলার চেয়ে পারিশ্রমিক বড় কিছু নয়। চেয়েছিলাম মাঠে খেলার একটা সুযোগ। চেয়েছিলাম, মনের আনন্দে ফুটবল খেলব। সেটা খেলতে পারছি বলেই ভালো লাগছে।

ছোটখাটো গড়নের মিরোনার খেলাধুলায় অভিষেক হয় অ্যাথলেটিকসের মাধ্যমে। তবে অ্যাথলেটিকস ছাড়িয়ে নারী ফুটবলেই বেশি পরিচিতি পান। ৪ ফুট ৮ ইঞ্চি উচ্চতার মিরোনা ২০১৪ সালে মালদ্বীপের ঘরোয়া ফুটবলে খেলেছেন।

এ ছাড়া মিরোনা অ্যাথলেটিকসের ট্র্যাক মাতিয়েছেন বিজেএমসি ও নৌবাহিনীর হয়ে। দূরপাল্লার দৌড়ে ৮০০, ১৫০০ ও ৩০০০ মিটারে জাতীয় অ্যাথলেটিকসে সোনা জিতেছেন ১৩ বার।

Development by: webnewsdesign.com