কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। কর্ম মানে কাজ। Many man many work. সমাজ গৃহীত কাজে নেহি লাজ। কাজেই ব্যক্তিকে আত্মস্বীকৃত ও অভিজ্ঞতার সঞ্চারণ ঘটায় এবং পরিবারে ও সমাজের অগ্রগতিতে অবদান রাখতে উৎসাহিত করে। বৃক্ষফলে পরিচয় আর মানুষ সৎকর্মে আত্ম পরিচয় প্রসারিত করে পরিবার ও সমাজে। কাজ সাধারণত শারীরিক ও মানসিক উপায়ে সম্পাদন করা হয়। Working is not only livelihood but also developing human society.
কথায় আছে জুতা সেলাই থেকে চন্ডীপাঠ পর্যন্ত মানুষের জানতে হয়। শারীরিক মানসিক কর্ম মানুষকে জীবন পরিচালনায় সমন্বিত ও উন্নতির দিকে ধাবিত করে। ন্যায়নিষ্ঠ সৎকর্মই মানুষকে শান্তি স্বস্তি ও অগ্রগতির দিকে ধাবিত করে। অসংখ্য কর্ম ও পেশায় আত্ম নিয়োগ করে মানুষ জীবিকায়ন ও অগ্রগতির পানে ছুঁটছে তো ছুঁটছে। Working is the best exercise & learning-earning way. কৃষি উৎপাদন কর্ম নিজ হিত ও পরোপকারে তাইতো কবি বলেছেন সব সাধকের বড় সাধক আমার দেশের চাষা। চাষ কর্ম করে কৃষক সমাজ খাদ্য ও ফলন উৎপাদন করেন। যে কর্ম নিজ হিত ও অপরের কল্যানে সাধন ঘটে সে কর্মের প্রতি মানুষের উৎসাহ ব্যঞ্জক হওয়া উচিত। আমরা প্রত্যেকেই কাজ করি। সেটা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় দুই হতে পারে। এই কাজের মধ্যে কোন কোন কাজে সবাই প্রশংসা করে। সবার মঙ্গল হয় এমন কাজ হচ্চে ভালো কাজ। কাজ দেহে প্রশান্তি ও মনে আনন্দ এবং অর্থ উপার্জন তথা উন্নয়ন অগ্রগতিতে প্রসার ঘটায়। কথায় আছে কাজে কাজী। কাজে পরিচয় ও মূল্যায়ন। কাজে প্রচার প্রসার অকাজে সর্বনাশ। কাজ কল্যাণধর্মী এবং মানবতায় দেয় হাতছানী। অ-কাজ অকর্মন্যতা ও অলসতা বৃদ্ধি সহ জঞ্জাল প্রবণ। কৃষিকর্ম, সাহিত্যকর্ম, চিকিৎসা সেবা, পাঠদান প্রভৃতি সহ অসংখ্য কাজ সমাজ ব্যবস্থায় বিদ্যমান। কাজ শারীরিক ও মানসিক দুই অবস্থাতেই প্রভাব বিস্তার করে। কাজের জন্য শারীরিক ও মানসিক শ্রম অবধারিত। বাঁচতে হলে খেতে হয়। খেতে হলে কর্ম সম্পাদনের মধ্য দিয়ে আয় উপার্জন করতে হয়। চুরি ডাকাতি, ঘুষ, সন্ত্রাস, দুর্বৃত্ত, অন্যায়-অবিচার ও সমাজ গর্হীত পরনিন্দা, হিংসা, অপরের ক্ষতি হয় এমন সব কিছুই অ-কাজ বা মন্দ কাজ।
অ-কাজ, অনাচার, অশান্তি ও সর্বনাশের মূল। যেকোন পেশায় কাজ গুণ ও মান থাকে এবং আয় উপার্জন এর পথ ও থাকে। কর্মের মাধ্যমে উপার্জন ও আত্মপরিচয় জাগ্রত হয়। কাজ অভিজ্ঞতার সঞ্চারণ ঘটায় এবং মননশীলতাকে প্রভাবিত করে মানবিকতার মূল্যবোধ প্রসার ঘটায়। Experience teaches the unskilled. নিজ হিত ও পরার্থে কল্যাণমূলক শারীরিক ও মানসিক শ্রম বিনিময় ইনকাম। কাজের বিনিময়ে আত্মউন্নয়ন পবিারে উন্নতি এবং সমাজে অবদান ঘটে। সমাজ গৃহীত মানবহিতকর কাজে বিচরণের মধ্য দিয়ে অদেখা স্থান দেখা যায়, অজানা বিষয় জানা যায় এবং জ্ঞানের প্রসার সহ অর্জন উপার্জন ও উন্নতি সাধিত হয়। অর্জন ও কাজে নতুন অভিধাও সন্নিবেশিত হয়। ব্যক্তিজীবনে কিছু কিছু কাজ এর সাথে সম্পৃক্ততা ঘটে। টিউশনী, শিক্ষকতা, পৌরহিত্য, পারিবারিক কৃষিকর্ম, গণমাধ্যমে মার্কেটিং এ কাজ এবং কলাম, কবিতা ও চিঠিপত্রে লেখা প্রভৃতি। এছাড়া নিত্যকর্ম ও সাংসারিক কর্মতো রয়েছেই। কর্ম দেহ মনে আনন্দ বয়ে আনে এমনকি জীবিকান্বেষনে অর্থ উপার্জন ও চলার পাথেয় হিসেবে ভূমিকা রাখে। কাজে সাজ, কাজে বিচরণ সহ জ্ঞান অর্জন ও অর্থোপার্জন সহ জানা অজানা আনন্দ।
কাজে আত্মজিজ্ঞাসা তৈরী হয় আগ্রহ ও দক্ষতা বাড়ে এতে আত্ম উন্নয়ন ও মননশীলতা উদ্ভাস ঘটে। কাজই উন্নতি ও অগ্রগতিতে প্ররোচিত করে এবং পরিবারে উন্নয়নের প্রেরণা জাগে। মোটকথা ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ জাতি সবাই কাজের মাধ্যমে দেশকে দেয় সমৃদ্ধি ও মানুষকে দেয় অগ্রগতির পথ চলা। সমাজে প্রত্যেকেরই কাজের উন্নতি অগ্রগতি ও অবদান থাকা ও রাখা প্রয়োজন। এতে দেশ প্রেম মানুষে সস্প্রীতি ও আন্দোলন সংগ্রামে ঘটে ফলপ্রসূ উন্নতি। ভাষা সংগ্রামীরা ঐক্যবদ্ধভাবে ভাষার মর্যাদা রক্ষায় কাজ ও আত্মাহুতি দিয়েছিলেন। আর একাত্তরে মুক্তিকামী মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামী কাজের রক্তক্ষয়ী ফসল ১৯৭১ সালের অর্জিত স্বাধীনতা ও বিজয়। মানব জীবন নিত্য সংগ্রামের জীবন। দৈনন্দিন কাজের মধ্য দিয়ে ব্যক্তি পরিবার ও সমাজের উন্নয়ন অগ্রগতি ঘটে। কাজের ধরনের শেষ নেই। জীবন জীবিকার কাজ মহান কাজ মহৎ কাজ, সেবা মূলক কাজ, পারিবারিক কাজ, সামাজিক কাজ, রাজনৈতিক কাজ, ধর্মীয় কাজ, ব্যবসায়ীক কাজ, অর্থনৈতিক কাজ, সাংস্কৃতিক কাজ, চিকিৎসা ও শিক্ষামূলক কাজ। কাজে আত্ম উন্নয়ন ও সমাজের কল্যান সাধিত হয়। যে ক্রিয়াকর্ম মানুষের জীবন ঘনিষ্ট উন্নয়ন ও অগ্রগতি সহ সম্প্রীতি তৈরী করে সে কর্মই মহান ও মহৎ কাজ। কোন কাজই সহজ নয়। কাজের গুণ সব জায়গায় সব ক্ষেত্রে। গ্রামীন কর্ম সম্পাদনে জাত পেশায় কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতী দিন মজুর নানা কর্মের শ্রমিক নিজের জীবন জীবিকার জন্য কাজ করছেন পরিবার পরিচালনা করছেন পরোক্ষভাবে দেশ ও সমাজের কাজে আসছেন। আজ কালকার পড়াশোনা ও কর্ম বহুরূপী। অলস এবং বেকার থাকার সুযোগ নেই এ যুগে। পরনির্ভরশীলতা মানসিক শক্তি ও বুদ্ধিমত্তাকে পঙ্গু করে অলস করে দেয়। অলস মস্তিস্ক ও শরীর অকর্মণ্য ও হীনতায় ভুগে। প্রতিটি মানুষই ব্যক্তি, পরিবার তথা সমাজ ও জাতির সম্পদ স্বরূপ। কাজই মানুষকে সম্পদে পরিনত করে। কাজ ও গুণের প্রকাশ মানুষকে সম্মানে ভূষিত করে। প্রযুক্তিগত কাজ, গ্রামীণ কাজ, শহুরে কাজ, দেশে কাজ, বিদেশে কাজ বিশেষ করে প্রযুক্তিগত কাজ/কারিগরি কাজ দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। জনাধিক্যের ফলে শিক্ষা এবং দক্ষতা থাকার পরেও বেকারত্ব বাড়ছে।
কথায় আছে বই পড়ে বই হয়ে যেয়োনা এবং উপার্জনের অহমিকায় নাড়ীর টান ও অস্তিত্বের মূলকে ভুলোনা। ভাব সম্প্রসারণে আছে পুঁথিগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন নহে বিদ্যা, নহে ধন হলে প্রয়োজন। ইচ্ছুক ও উদ্দ্যমী তরুণরা প্রথাগত বিদ্যার কৃতিত্ব অর্জন করেও থেমে নেই। তারা যুব উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং ভিনদেশী ভাষা শিখে বিদেশে কর্মক্ষম হচ্ছে। দেশে ও সরকারি চাকরির প্রত্যাশায় থেমে নেই। বিভিন্ন প্রকার ফল মূল শাক সবজি মৎস খামার দুগ্ধ খামার করে ইনকাম করছে। এমনকি কিছু লোকের কর্ম সংস্থান ও করছে। এতে আত্মোউন্নয়ন পরিবারের উন্নয়ন তথা দেশ ও সমাজের প্রত্যক্ষ পরোক্ষ উন্নতি অগ্রগতিতে সহায়ক ভূমিকা তৈরী হচ্ছে। কাজের ফাঁকি না দিয়ে বুদ্ধির সহিত কাজ পরিচালনা করা উচিত।
কাজকে ছোট করা, নিন্দা করা ও অবহেলা করা ঠিক নয়। কৃষক ফসল ফলান সকল শ্রেণীর মানুষে তা আহার করেন। আর দেশ প্রধান ও মন্ত্রী পরিষদের প্রধান, প্রধান মন্ত্রী ও দেশ ও দেশের মানুষের শান্তি উন্নতি এবং অগ্রগতির জন্য কাজ করেন। সঠিক কাজই সম্পদের যথাযথ ব্যবহারে ও মানুষের কল্যাণে কাজে আসে। কাজে খাদ্য যোগায় আনন্দ দেয় ও ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেয় এবং কৃতিত্বের প্রমান স্বরূপ রাখে। অর্থ বিত্ত যশ মান খ্যাতি এসব কিছুর মূলে সৎকর্ম বা কাজ। সৎ চিন্তায় মহৎ ভাবনা এবং সৎ কাজে মহান কৃতিত্ব বৃদ্ধি পায়। কাজের মূল্যবোধ বৃদ্ধি পাক সকলের মধ্যে এমনটাই প্রত্যাশা।
লেখক- কলামিস্ট, কবি ও প্রাবন্ধিক
Development by: webnewsdesign.com