কাজিপুরে উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ

মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪ | ১০:০৮ অপরাহ্ণ

কাজিপুরে উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ
কাজিপুরে উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ
apps

কাজিপুর প্রতিনিধিঃ- সিরাজগঞ্জের কাজিপুরের চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়নের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্সকর্তা কে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে অগ্নি সংযোগ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ২১ মে রাত অনুমান দুইটা থেকে তিনটার দিকে উপজেলা চালিতাডাঙ্গা ইউনিয়ন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র সংলগ্ন তার (ভুক্তভোগী) বাসভবনে এঘটনা ঘটে, সেখানে থাকতেন উপসহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার মনিরুজ্জামান।

সরেজমিনে গিয়ে , আহতের বসত ঘরে ছোপ ছোপ রক্ত এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর অবস্থায় দেখা যায়। এছাড়াও সংরক্ষিত ঔষধ পুড়ে ছাই হয়ে আছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চালিতাডাঙ্গা উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন মনিরুজ্জামান (৩৮), পাশাপাশি তিনি মা বোনসহ কর্মস্থলে থাকতেন। ২১ মে ভোর ৪ টার দিকে উপস্বাস্থ্য আগুন জ্বলতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন, ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মনিরুজ্জামানকে মারাত্মক আহত ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করে কাজিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

সকাল ১০ টার দিকে তার জ্ঞান ফেরে। জ্ঞান ফেরার পর আহত উপ-সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, ধান কাটা মৌসুম শুরু হওয়ায় ভাই-বোন নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়নের ডিগ্ৰি দোরতা গ্ৰামের বাড়িতে ছিলো, আমি একাই ছিলাম, রাত আনুমানিক ২থেকে ৩ টার দিকে ঘুমের মধ্যে গলা টিপে ধরে এবং আঠা দিয়ে মুখ আটকে দেয়, এ অবস্থায় মারতে মারতে টেনে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যায়, আমার পিঠে এসিড ঢেলে দেয়, বেদম মারধরে আমি অজ্ঞান হবার আগে আমার সহদর ভাই চর দোরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বাবলু এবং কাজিপুর উপজেলা যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা আলী আসলামসহ কয়েকজনকে চিনতে পারি, এ ঘটনায় আমি কার কাছে বিচার চাইবো? এ সময় তিনি জানান, পারিবারিক সম্পত্তি ভাগবাটোয়ারা সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল, এর আগেও মনিরুজ্জামানকে বিভিন্নভাবে মারধর, মিথ্যা মামলা, প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল প্রতিপক্ষ, এবং শিশু সন্তানকে পানিতে ফেলে দেয়ার মতো অভিযোগ জানান, আরো জানান, জেলা পর্যন্ত প্রশাসনের প্রতিটি স্থরে প্রমাণসহ অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ হয়নি, অপঘাতে মৃত্যুর আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধান অভিযুক্ত ও আহতের সহদর ভাই চর দোরতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুহুল আমিন বাবলুর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন কেটে দেন। অপর অভিযুক্ত আলী আসলাম বলেন, আমি গত ২০ মে বিকেলে কাজিপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেই, ঘটনার সাথে আমি জড়িত না, মনিরুজ্জামানের সাথে আমার কোনো আত্মীয়তা বা বিরোধ কোনো সম্পর্ক নেই। আমাকে ফাঁসাতে আমার নাম বলছে, আসলে তার সাথে আমার কোন শত্রুতা নেই বন্ধুত্ব নেই। আমি কোন ভাবেই এ ঘটনার সাথে জড়িত নয়।মিথ্যা ভাবে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছে।

এ বিষয়ে কাজিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মোমেনা পারভিন পারুল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্টোররুমসহ ২টি রুমের আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে গেছে, স্টোরে প্রায় ৪লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ঔষধ ছিলো, মনিরুজ্জামান একটু সুস্থ্য হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাজিপুর থানা অফিসার ইনচার্জ শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, লিখিত অভিযোগ পেলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Development by: webnewsdesign.com