মহামারি করোনাভাইরাস সঙ্কট থেকে দ্রুত উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২৬ এপ্রিল) এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (এসকাপ) ৭৭তম অধিবেশনে চার দফা প্রস্তাব পেশ করে এ আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে ধনী রাষ্ট্র, উন্নয়ন সহযোগী ও আর্থিক সংস্থাগুলোর এগিয়ে আসা উচিত।
এসকাপের প্রতি শেখ হাসিনার ৪ দফা পরামর্শ তুলে হলো:
কোভিড মহামারি থেকে দ্রুত উত্তরণে উন্নত বিশ্ব, উন্নয়ন অংশীদার এবং আইএফআই’র এগিয়ে আসা উচিত।
যেকোনো সংকট থেকে আরও ভালোভাবে উত্তরণের জন্য উন্নয়ন পদ্ধতি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্থিতিস্থাপক ও পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত।
এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি শক্তিশালী ও সার্বজনীন জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দক্ষ নীতি ও কৌশল গ্রহণ করা উচিত।
এবং আমাদের বাণিজ্য, পরিবহন, শক্তি এবং আইসিটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিরামবিহীন যোগাযোগ স্থাপন করা দরকার।
অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মহামারি বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং অর্থনীতিগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রায় ২.৯৫ মিলিয়ন মানুষ মারা গেছেন এবং প্রতিদিন আরও শত শত মানুষ এ রোগে মারা যাচ্ছেন। মহামারিটি অনেক মানুষকে দরিদ্র করে তুলেছে এবং অনেকে আবারও দারিদ্র্যের দিকে ফিরে যাচ্ছে।
সামাজিক সুরক্ষা প্রশস্তকরণ, চাকরি ধরে রাখা এবং অর্থনীতিকে মজবুত করার জন্য আমরা ১৪.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা আমাদের জিডিপির ৪.৪৪ শতাংশ বলেও উল্লেখে করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমাদের সর্বশেষ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় কোভিড-১৯ থেকে পুনরুদ্ধার এবং বাংলাদেশকে মসৃণ ও টেকসই এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, এসডিজি অর্জন, এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ দেশে উত্তরণের পথ নির্ধারণের কৌশল অন্তর্ভুক্ত ছিল।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতাকে সমৃদ্ধির সবচেয়ে কার্যকর বিকল্প হিসেবে দেখছি। আমরা সার্ক, বিমসটেক, বিবিআইএন, বিসিআইএম-ইসি এবং ত্রিপক্ষীয় হাইওয়ে উদ্যোগগুলোতে যুক্ত রয়েছি। ‘সাউথ-সাউথ নেটওয়ার্ক ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন’ অন্যান্য দেশের সাথে অংশিদারিত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে সহায়তা করে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স এশিয়া রেলপথের বর্ধিত সংযোগ এবং এসকাপের উদ্যোগের প্রবল সমর্থক। বাংলাদেশ আন্তঃসীমান্ত কাগজবিহীন বাণিজ্য, এশিয়া-প্যাসিফিক বাণিজ্য চুক্তি, পিপিপি নেটওয়ার্কিং এবং ইউএন-এসকাপের অন্যান্য উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছে। আমরা নিরাপদ, সুশৃঙ্খল এবং নিয়মিত অভিবাসনের জন্য গ্লোবাল কম্প্যাক্ট অর্জনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন শেখ হাসিনা।
এ সময় তিনি তুলে ধরেন, মিয়ানমার থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত ১ লাখ রোহিঙ্গাকে রাখছে বাংলাদেশ। টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে একটি কার্যকর সমাধানের জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে দৃষ্টি নিবদ্ধ করার আহ্বান জানাই।
Development by: webnewsdesign.com