প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১১৫ জনে। তবে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা আগের থেকে কিছুটা কমেছে। হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নতুন ধরনের এ করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর আসার পর সোমবার একদিনেই সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী ১০৮ জন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১০৩ জনের মৃত্যু হয়েছে হুবেই প্রদেশে।
চীনের বাইরে ফিলিপিন্স ও হংকংয়ে দুই চীনা নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। চীনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৪ হাজার ১৩৮ জন। বিভিন্ন দেশ মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছাড়িয়েছে।
দেশটিতে দিন দিন পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় আতঙ্কে আছেন স্থানীয়দের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের অভিবাসীরা। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা ভাইরাসের নতুন নাম দিয়েছে কভিড-নাইনটিন।
সিঙ্গাপুরে আরও দু’জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যার একজন বাংলাদেশি। এর আগে দেশটিতে করোনা ভাইরাসের মোট ৪৫ জন রোগী শনাক্ত হয়। তার মধ্যেও একজন বাংলাদেশি ছিলেন।
বর্তমানে রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৪৭ জনে দাঁড়ানোর পাশাপাশি আক্রান্ত বাংলাদেশির সংখ্যাও বেড়ে দু’জন হলো। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে দি স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকা জানায়, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ জনে উন্নীত হয়েছে।
নতুন রোগীর মধ্যে বাংলাদেশি ব্যক্তির বয়স ৩৯ বছর। তিনি সেলেটার অ্যারোস্পেস হাইটে কাজ করেন। এর আগে যে বাংলাদেশি আক্রান্ত হন, তিনিও ওই এলাকায়ই কাজ করেন। তবে তারা এক বাড়িতে থাকতেন না।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তার মধ্যে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ বুঝতে পারেন তার পরদিন তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। হাসপাতালে ভর্তির আগ পর্যন্ত তিনি বীরাস্বামী রোডের ভাড়া করা বাসায় ছিলেন।
নতুন অন্য যে রোগী শনাক্ত হয়েছেন তিনি সিঙ্গাপুরেরই নাগরিক। ৩৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একটি ক্যাসিনোয় কাজ করেন। তিনি থাকেন জোহর বারু এলাকায়। নতুন আক্রান্ত দুজন বাংলাদেশি ও সিঙ্গাপুরের নাগরিক কেউ সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেননি অর্থাৎ এখান থেকেই তারা কারও মাধ্যমে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হন।
বাংলাদেশে এখনও করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়নি। সিঙ্গাপুর বাদে অন্য কোনো দেশে কারও আক্রান্ত হওয়ার খবরও এখনও মেলেনি।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে সাত জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। আরও দুজন রোগ থেকে সেরে উঠে হাসপাতাল ছেড়েছেন। এ নিয়ে মোট ৯জন রোগী সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন। পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ দেশ সিঙ্গাপুরে সব মিলিয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এম জে এইচ জাবেদ তাদের নতুন এ করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনে হাই কমিশনে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন। সিঙ্গাপুরে গত ২৩ জানুয়ারি করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী ধরা পড়ে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী চীনের বাইরে এ পর্যন্ত ৩০টি দেশে কমবেশি করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুর-জাপান আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ। চীনের বাইরে ৩০টি দেশে একজনের মৃত্যুসহ ৩২০ জনের দেহে মিলেছে করোনাভাইরাস। মার্চের শেষ পর্যন্ত চীনের সঙ্গে বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ।
জাপানের ইয়োকোহামায় মাঝ সমুদ্রে দাঁড়িয়ে থাকা ডায়মন্ড প্রিন্সের ক্রুজ শিপে কোয়ারেনটাইনে থাকা ৩৭০০ জন ক্রু ও যাত্রীর মধ্যে আরও ৬৫ জনের দেহে মিলেছে এই ভাইরাস। ফলে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে ১৩৫।
Development by: webnewsdesign.com