যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামল সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার মতো হবে না বলে মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেছেন, সময় ও পরিস্থিতি ইতিমধ্যে অনেক বদলে গেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার অনেক কিছুই বদলে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর প্রথম টিভি সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন বাইডেন। এনবিসি নিউজের লাসটার হল্টকে গতকাল মঙ্গলবার এই সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে দুই দফার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন বাইডেন। অনেকটা ঐতিহ্য ভেঙেই ওবামা সরাসরি নির্বাচনী মাঠে নেমে বাইডেনের জন্য কাজ করেছেন। তাই অনেকেই মনে করছেন, বাইডেন প্রশাসনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রভাব থাকবে। বাইডেন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁর শাসনামল ওবামার তৃতীয় দফা হবে মনে করার কোনো কারণ নেই। এমনটি হবে না। কারণ, পৃথিবী বদলে গেছে। ‘আমেরিকাই প্রথম’ করার কথা বলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আমেরিকাকে একাকী করেছেন। তিনি আমেরিকার অনেক কিছুই বদলে দিয়েছেন।
বাইডেন বলেন, ক্ষমতা গ্রহণের ১০০ দিনের মধ্যেই তিনি অভিবাসন সংস্কারে উদ্যোগ নেবেন। নথিপত্রহীন ১ কোটি ১০ লাখের বেশি অভিবাসীকে আমেরিকায় নাগরিকত্ব পাওয়ার পথ প্রশস্ত করার আইন প্রস্তাব তিনি সিনেটে পাঠাবেন। এই সময়ের মধ্যেই নাগরিক প্রণোদনা আইন পাস করা হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব বৈরী নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন, সেসব বাতিল করবেন বলে জানিয়েছেন বাইডেন।
ট্রাম্পের শাসনামল নিয়ে তদন্ত করবেন কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে বাইডেন নেতিবাচক উত্তর দিয়েছেন। ট্রাম্পের মতো বিচার বিভাগকে ব্যবহার করা হবে না বলে তিনি জানান। বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার জনগণকে নিশ্চিত অবস্থানে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টিতে তিনি গুরুত্বের সঙ্গে নজর দেবেন। এনবিসি নিউজের লাসটারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেছেন, নির্বাচনের সময় থেকে এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কোনো সরাসরি কথা হয়নি।
তবে বাইডেন জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর ট্রানজিশন টিমের সঙ্গে আন্তরিকভাবে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। গোয়েন্দা ব্রিফিং পাওয়ার জন্য তাঁর প্রশাসনের উদ্যোগের কথা তিনি জানান। নির্বাচনের প্রায় তিন সপ্তাহ পর গত সোমবার ফেডারেল এজেন্সির পক্ষ থেকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বাইডেনকে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতির জন্য চিঠি দেওয়া হয়। নির্বাচনে নিশ্চিতভাবে হেরে গেলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নানা ফন্দিফিকির করে ফলাফল ঝুলিয়ে রাখার চেষ্টা করে আসছিলেন। আদালতে গিয়েও তিনি হেরে যান।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটাতে থাকেন ট্রাম্প। প্রমাণ ছাড়াই ভোটে কারচুপি ও জালিয়াতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ফলাফল কোনো দিন মেনে না নেওয়ারও ঘোষণা দেন। ঐতিহ্য অনুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীকে এখনো অভিনন্দন জানাননি ট্রাম্প। এমন কাজ তিনি করবেন বলেও আর মনে করা হচ্ছে না।
সংবিধান অনুযায়ী আগামী ২০ জানুয়ারি ক্ষমতার আনুষ্ঠানিক হস্তান্তর হবে। ট্রাম্পের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় উপস্থিত না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই। অবশ্য বিদায়ী প্রেসিডেন্টের আনুষ্ঠানিক পালাবদলে উপস্থিত না থাকার ঘটনাও আমেরিকার ইতিহাসে নজিরবিহীন।
Development by: webnewsdesign.com