একাদশ সংসদ পরিপূর্ণ ও প্রাণবন্ত:: স্পিকার ড. শিরীন শারমিন

বুধবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২০ | ১০:০২ অপরাহ্ণ

একাদশ সংসদ পরিপূর্ণ ও প্রাণবন্ত:: স্পিকার ড. শিরীন শারমিন
apps

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সকল দলের অংশগ্রহণে একাদশ সংসদ পরিপূর্ণ হয়েছে। গত বছরে সরকার ও বিরোধী দলের আলোচনায় প্রাণবন্ত ছিলো এই সংসদ। কথা কথায় সংসদ বর্জন-এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে সকল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

চলতি সংসদের বর্ষপূর্তিতে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত বর্তমান সংসদের যাত্রা শুরু হয় গত বছরের ৩০ জানুয়ারি। এই সংসদের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেই হিসেবে আজ বুধবার চলতি সংসদের এক বছর পূর্ণ হচ্ছে। আগামীকাল থেকে দ্বিতীয় বছর শুরু হবে। বছর শেষে মূল্যায়নে চলতি সংসদের দেশের অন্যতম বৃহত্তর বিরোধী দল বিএনপি সংসদে ফেরার পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি সরকারের ভিতর থেকে বেরিয়ে প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকায় ফিরেছে। জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সংসদের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে।

এ বিষয়ে স্পিকার বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। গত বছরে সংসদ অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও কার্যকর ছিলো।

 

 

 

 

তিনি আরো বলেন, দেশে এখন কোন হরতাল-অবরোধ নেই। জনগণকে দিনের পর দিন ধর্মঘটের মুখোমুখি হতে হয় না। সকল বিষয় সংসদে আলোচনা হয়। গত বছর সংসদে নারী ধর্ষণ-নির্যাতন, রোহিঙ্গা সংকট, পূঁজিবাজার ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, পেঁয়াজ সংকটসহ জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

সংসদ বর্জনের সংস্কৃতির অবসান হয়েছে উল্লে­খ করে ড. শিরীন শারমিন বলেন, অনেক দিন পর সকল দলই সংসদে উপস্থিত আছে। এই সংস্কৃতি কষ্ট করে গড়ে তুলতে হয়েছে। আগে আমরা সংসদ বর্জন, লাগাতার বর্জন দেখতাম। কিন্তু সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে এসে সংসদে উপস্থিত থেকে কথা বলা শুরু হয়েছে। আর সেটা মতভিন্নতা হোক, আর সমালোচনাই হোক। এখন রাস্তায় সমালোচনা না করে আমরা সংসদে সমাধান করার একটি সংস্কৃতি তৈরির দিকে অগ্রসর হচ্ছি। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক।

স্পিকার বলেন, সকলে সংসদে থাকলেও অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার নেই বললেও চলে। বিরোধীদলীয় সদস্যরা যখন খুশি, যে কোন ইস্যুতে কথা বলতে পারছেন। তারা প্রশ্নোত্তরে অংশ নিচ্ছেন। জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নোটিশ দিচ্ছেন। বাজেট আলোচনা ও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় পর্যাপ্ত সময় পাচ্ছেন। পয়েন্ট অব অর্ডারেও বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলছেন। আলোচনায় কোনো বাধা নেই।

 

 

 

 

দেশের ইতিহাসে সব থেকে বড় বাজেট পাসের কথা উল্লেখ করে ড. শিরীন শারমিন বলেন, এই সংসদে বাজেট ছাড়াও অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ আইন পাস হয়েছে। এক বছরে ২১টি আইন পাসের প্রক্রিয়ায় সরকার ও বিরোধী দল স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। জলবায়ু ইস্যুতে একটি সাধারণ প্রস্তাবও গ্রহণ করা হয়েছে। যা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর জন্য একটি দৃষ্টান্ত। এর আগে উন্নত দেশগুলো জলবায়ু ইস্যুতে রেজুলেশন নিলেও ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম। এক্ষেত্রে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ রয়েছে। বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনগুলোতেও ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর পক্ষ থেকে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখছেন।

এই সংসদ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’ পালনের বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে জানিয়ে স্পিকার বলেন, মুজিব বর্ষে বিশেষ অধিবেশনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। আগামী ২২ ও ২৩ মার্চ বিশেষ অধিবেশন ডাকা হবে। আগামী মাসেই বিদেশি অতিথিদের তালিকা চূড়ান্ত হবে। তবে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয় দেশগুলোর এবং রাশিয়া ও যুক্তরাজ্যের স্পিকারসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রথম বছরেই চলতি সংসদের সদস্য বিরোধীদলীয় নেতা এইচ এম এরশাদ ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ সাত জন সংসদ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনা সকলকে ব্যথিত করেছে বলে তিনি উল্লে­খ করেন। তিনি সকলের সহযোগিতায় এই সংসদ আরো বেশি কার্যকর ও প্রাণবন্ত হবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

Development by: webnewsdesign.com