উত্তাল সাগরের আছড়ে পড়া ঢেউয়ে তছনছ হচ্ছে উপকূল রক্ষাকারী সবুজ ঝাউবিথী। প্রচণ্ড জোয়ারের পানির আঘাতে উপড়ে পড়ছে একের পর এক ঝাউগাছ। এ ছাড়াও হুমকিতে পড়েছে বিমান বাহিনীর স্থাপনা। শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে সৈকতের ডায়াবেটিস পয়েন্টে এ দৃশ্য দেখা যায়।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুর রহমান বলেন, কক্সবাজারকে ৩ নম্বর স্থানীয় সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকার পাশাপাশি বাতাসও রয়েছে।
জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে আড়াই ফুট উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। যার কারণে জোয়ারের পানির আঘাতে ঝাউগাছ উপড়ে যাচ্ছে। তবে পানির গতিবেগ ও উচ্চতা আরও বেড়ে যাবে আগামীকাল রোববার (২৫ জুলাই) থেকে। যা আগামী ২৭ জুলাই পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
সরজমিনে সৈকত ডায়াবেটিস পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, সাগরের প্রবল জোয়ারের একের পর এক ঝাউগাছ উপড়ে পড়ছে। প্রায় ১ কিলোমিটারের মধ্যে অর্ধশতাধিক ঝাউগাছ ভেঙে গেছে। এ ছাড়াও বিমান বাহিনীর কয়েকটি সীমানা পিলার উপড়ে গেছে। আর যে ঝাউগাছগুলো উপড়ে গেছে তা বনবিভাগের তত্ত্বাবধানে কেটে সরবরাহ করা হচ্ছে।
ঝাউগাছ কর্তনকারী ওয়াজ উদ্দিন বলেন, সকাল থেকে এ পর্যন্ত ৩০টি ঝাউগাছ কেটে সরবরাহ করা হয়েছে। বাকিগুলোও কাটতে আরও সময় লাগবে। আমরা প্রায় ১০ জনের অধিক শ্রমিক বনবিভাগের আওতায় গাছ কাটার কাজ করছি।
বনবিভাগ কস্তুরাঘাট বিটের বাগানমালি তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রচণ্ড জোয়ারে গত দুইদিনে বিপুল পরিমাণ ঝাউগাউ উপড়ে গেছে। উপড়ে যাওয়া ঝাউগাছগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে।
সী সেইফ লাইফ গার্ড সংস্থার প্রজেক্ট ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, দিন দিন সাগরের আগ্রাসন বাড়ছে। এই আগ্রাসনে ঝাউবিথীর পাশাপাশি বিমান বাহিনীর স্থাপনাও হুমকি মুখে পড়েছে। গত দুদিনে প্রায় শতাধিক ঝাউগাছ প্রবল জোয়ারের পানির আঘাতে উপড়ে গেছে ধারণা করছি।
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দিপু বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের পানির উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। যার কারণে পূর্ণিমা জোয়ার বা আমাবস্যায় জোয়ারের পানি উপকূলে তাণ্ডব চালাচ্ছে। তাই উপকূলে লতাপাতা প্রজাতি ও ঝাউগাছ রোপণের প্রয়োজন মনে করছি। এরপর একটি টেকসই শহর রক্ষা বাঁধ দেওয়া দ্রুত প্রয়োজন। যাতে উপকূলের মানুষ ও সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষা করা যায়।
Development by: webnewsdesign.com