নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনার জয়ের নায়ক এমিলিয়ানো ‘দিবু’ মার্তিনেজ। ২–০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও নির্ধারিত ৯০ মিনিটে আর্জেন্টিনা যখন জিততে পারল না, অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও বন্ধ্যাত্ব ঘুচল না, তখন মেসি, দি মারিয়া বা হুলিয়ান মার্তিনেজদের কাছ থেকে মনোযোগটা ঘুরে যায় আর্জেন্টাইন গোলকিপারের দিকেই। তাঁর ওপর আশা–ভরসা দুই–ই ছিল সমর্থকদের। গত বছর কোপা আমেরিকায় টাইব্রেকার ঠেকিয়ে তারকা বনে যাওয়া গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেজ আশাহত করেননি বিশ্বকাপেও। নেদারল্যান্ডসের দুটি শট ঠেকিয়ে এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার ‘সের্হিও গয়কোচিয়া’ তিনিই।
১৯৯০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে খাদের কিনারা থেকে ফাইনালে তুলেছিলেন তিনজন—ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও ক্লদিও ক্যানিজিয়ার পাশাপাশি গোলকিপার সের্হিও গয়কোচিয়া। কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনালে যুগোস্লাভিয়া ও ইতালির বিপক্ষে চীনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান গোলকিপার গয়কোচিয়া। অথচ, সেই গয়কোচিয়া ছিলেন আর্জেন্টিনা স্কোয়াডের অতিরিক্ত গোলকিপার। প্রথম ম্যাচে ক্যামেরুনের কাছে হারার পর সোভিয়েত ইউনিয়নের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে পা ভেঙে গিয়েছিল নিয়মিত গোলকিপার নেরি পম্পিডুর। সেই ম্যাচে গ্লাভস পরে মাঠে নেমে ইতিহাসের ঘটনাপ্রবাহকে নিজের দিকেই টেনে নেন গয়কোচিয়া।
এমিলিয়ানো মার্তিনেজের ব্যাপারটি এমন নয়। গত কোপা আমেরিকার পর থেকেই মনোযোগ তাঁর দিকে। আর্জেন্টিনা অনেক দিন পর দারুণ একজন গোলকিপার পেয়েছে, গোলবারের নিচে যিনি বড় এক ভরসার জায়গা—এমন কথাবার্তা দেড় বছর ধরেই চলছে। বিশ্বকাপটা মার্তিনেজের জন্য আর্জেন্টাইন ফুটবলে নিজেকে অমর করে রাখার উপলক্ষও। এখন পর্যন্ত সে লক্ষ্যে সফল তিনি। কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পেনাল্টি শুটআউট তো ঠেকিয়েছেনই, শেষ ষোলোতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে অবিশ্বাস্য এক সেভে বাঁচিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ–স্বপ্ন। সেমিফাইনালে মার্তিনেজ চাইবেন নিজেকে অন্য উচ্চতায় তুলে নিতে। পেনাল্টি ঠেকানোর ব্যাপারটি তো আছেই, মাঠের লড়াইয়ে মার্তিনেজের ওপর যে বিরাট ভরসা আর্জেন্টিনা দলের।
মার্তিনেজ নিজেও জানেন তাঁর দিকে দল কতটা তাকিয়ে। নিজেকে তৈরি করার পাশাপাশি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল নিয়ে রোমাঞ্চিত মার্তিনেজ। ঠিক আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মতোই, ‘আমরা হৃদয় দিয়ে খেলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে এসেছি। আমরা সবাই রোমাঞ্চিত, আমাদের দেশের মানুষের মতোই।’
এই গোলকিপার জানেন সেমিফাইনাল নিয়ে আর্জেন্টিনার মানুষ কতটা আবেগপ্রবণ, ‘আবেগটাই আগে আসে। আমরা ম্যাচটা জেতার চেষ্টা করব আর্জেন্টিনার সাড়ে চার কোটি মানুষের জন্য।
আর্জেন্টিনার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব ভালো নয়। ভালো নেই আর্জেন্টিনার মানুষ। আমজনতার মুখে হাসি ফোটাতেই বিশ্বকাপ জিততে চান মার্তিনেজ। বলছেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভালো অবস্থায় নেই। দেশের মানুষ খুব কঠিন একটা সময় পার করছে। এবার বিশ্বকাপ জিতে আমরা দেশের মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চাই।
Development by: webnewsdesign.com