রিয়াল মাদ্রিদ আপাতত বেশ এগিয়ে। তাই বলে বার্সেলোনা ‘বিনা যুদ্ধে সূচ্যগ্র মেদিনী’ দেবেই বা কেন? শেষ পর্যন্ত লড়ে যাচ্ছে কাতালানরা। যদি মৌসুমের বাকি ম্যাচগুলো জিতে রিয়াল মাদ্রিদকে কোনোভাবে ধরা যায় আর কি!
সেই লক্ষ্যে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে গেল আজ বার্সেলোনা। নিজেদের মাঠ ক্যাম্প ন্যু তে আজ দলটা ১-০ গোলে হারিয়েছে সেভিয়াকে। গোল করেছেন মিডফিল্ডার পেদ্রি। আর এই জয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ ও সেভিয়াকে টপকে আপাতত পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে নিজেদের অবস্থানটা পোক্ত করল বার্সেলোনা।
গোলের পর বার্সেলোনার উল্লাস রিয়াল এখনও ১২ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে। বার্সেলোনার আশার কথা হলো, এখনও কাতালানদের হাতে এক ম্যাচ বাকি, সেই এক ম্যাচ জিতলে ব্যবধানটা কমে ৯ হবে। এরপর বাকি আট ম্যাচে রিয়ালের পা হড়কানো আর নিজেদের সবগুলো ম্যাচ জেতার আশা করা ছাড়া কিছুই করার নেই বার্সেলোনার।
এই নিয়ে লিগে টানা ছয় ম্যাচ জেতা হয়ে গেল বার্সেলোনার। জাভির অধীনে যে দলটাকে কয়েক মাস আগেও হতোদ্যম লাগছিল, নতুন বছরের শুরু থেকে কী দুর্দান্তভাবেই না দলটা পাল্টে গেল!
গোলের পর পেদ্রিকে আটকায়, সে সাধ্য কার! সম্ভাব্য সবচেয়ে শক্তিশালী দলটা নিয়েই মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। আলবা, পিকে, বুসকেতস, পেদ্রি, ডি ইয়ং, অবামেয়াং, দেম্বেলে, ফেরান, আলভেজ, টের স্টেগেন – মূল একাদশের প্রায় সবায়ই ছিলেন বলতে গেলে। শুরু থেকেই জাভির ধরণ অনুযায়ী দ্রুতগতির ফুটবল খেলা শুরু করে বার্সেলোনা। নিজেদের মধ্যে দ্রুত পাস আদান-প্রদান করে আক্রমণভাগের ডানদিকে থাকা দেম্বেলের গতি ব্যবহার করে আক্রমণ রচনা করার ব্যাপারে বেশ আগ্রহ দেখাচ্ছিল বার্সেলোনা।
কিন্তু ওদিকে সেভিয়া নেমেছিল গোল না খাওয়ার পণ করে। যে কারণে প্রথমার্ধে সুন্দর ফুটবল খেললেও গোলের দেখা পায়নি বার্সেলোনা। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগে অবামেয়াংয়ের এক শট আটকে দেন সেভিয়ার গোলকিপার ইয়াসিন বোনো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে তুলনামূলকভাবে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা শুরু করে সেভিয়া। কিন্তু এরপর আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় বার্সেলোনা। অল্প সময়ের ব্যবধানে আরও তিনটা সেভ করেন বোনো, পিকে-ফেরান আর আরাউহোকে গোলবঞ্চিত করেন। এরপরেই পিকের একটা শট লাগে ক্রসবারে, ওদিকে দেম্বেলের দর্শনীয় এক ভলি গোল এনে দিতে ব্যর্থ হয়।
গোল না আসলেও, বার্সেলোনার গোল পাওয়া যে সময়ের অপেক্ষা মাত্র, তখনই আরও ভালোভাবে বুঝতে শুরু করেন দর্শকেরা। দাঁতে দাঁত চেপে রক্ষণ করে যাচ্ছিল সেভিয়া, পারলে সবাই নিজেদের বক্সের ভেতরেই অবস্থান নিচ্ছিলেন। এর মধ্যেই ডানপ্রান্ত থেকে মাঝমাঠে থাকা পেদ্রির উদ্দেশ্যে পাস দেন দেম্বেলে।
বক্সের একটু বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা পেদ্রি পাসটা নিয়ন্ত্রণে এনে নিজের মুভমেন্টে পরাস্ত করেন অন্তত দুজন সেভিয়া ডিফেন্ডারকে। এরপর ডান পায়ের মাপা শটে গোল এনে দেন ম্যাচের প্রথম গোল। সে গোল আর শোধ করতে পারেনি সেভিয়া।
৮৬ মিনিটে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন পিকে, যদিও মাঠে থাকা সেভিয়া খেলোয়াড়দের অভিব্যক্তি দেখে মনে হচ্ছিল, লাল কার্ড দেখে পিকে মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলেই খুশি হতেন তাঁরা। তবে যাই হোক, বার্সেলোনার পুরো তিন পয়েন্ট পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি এসব ঘটনা।
Development by: webnewsdesign.com