১২ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা......

আজমিরীগঞ্জে বেপরোয়া সন্ত্রাসী মালেক বাহিনী,পাথর ব্যবসায়ী আহত

বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৭:৪৪ অপরাহ্ণ

আজমিরীগঞ্জে বেপরোয়া সন্ত্রাসী মালেক বাহিনী,পাথর ব্যবসায়ী আহত
apps

হবিগঞ্জে দাবীকৃত বড় অংকের চাঁদা না পেয়ে এক পাথর ব্যবসায়ীকে উপর্যুগপরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে আজমেরীগঞ্জের বেপরোয়া সন্ত্রাসী মালেক বাহিনী ও চাঁদাবাজ গ্রুপ। গত ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে পিরোজপুর চাঁনপুরহাটি সন্ত্রাসী গ্রুপদের আস্তানায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় লোকজন আহত পাথর ব্যবসায়ীকে সন্ত্রাসীদের হাত হতে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থায় অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেন।

বর্তমানে হাতপাতালের ৩য় তলার ১১নং ওয়ার্ডে মুমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাথর ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম (৩০)। তার অবস্থা আশংকাজনক। আহত আজিজুল ইসলাম হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ থানার পিরিজপুর গ্রামের মো: ইসমাইল মিয়ার পুত্র।

পৃথক এসব ঘটনায় আহত আজিজুল ইসলামের ছোট ভাই মো: সাগর মিয়া বাদী হয়ে ১২ সন্ত্রাসী গ্রুপ ও চাঁদাবাজদের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ১০/১৫ জনকে আসামী করে আজমিরীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেনে।

মামলার আসামীরা হচ্ছে, হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ থানার জুলসুখা এলাকার পিরিজপুর গ্রামের মো: নুরু মিয়ার পুত্র মো: আবু সাঈদ (৩৫), একই এলাকার মৃত আলতাব আলীর পুত্র মো: শাহ আলম (৪৫), মো: মালেক মিয়ার পুত্র মো: মহসিন মিয়া (২৫), মো: মুক্তার মিয়ার পুত্র মো: হৃদয় মিয়া (২৪), মো: আকবর মিয়ার পুত্র মো: শফিকুল মিয়া (৩৫), মৃত জিন্নত আলীর পুত্র মো: মস্তু মিয়া (৫০), তার ভাই মো: নবী মিয়া (৫৫), মো: শামছু মিয়ার পুত্র মো: কাবিল হোসেন (৩২), মো: নবী মিয়া পুত্র মো: মনির হোসেন (৩০), মৃত সুরুজ আলীর পুত্র মো: মালেক মিয়া (৫৫), মো: শাহ আলম মিয়ার পুত্র মো: হুসাইন মিয়া (২২) ও মো: মস্তু মিয়ার পুত্র মো: তকবির হোসেন (২৮)।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আজিজুল ইসলাম সিলেট ভোলাগঞ্জের সুনামধন্য একজন পাথর ব্যবসায়ী। তিনি সোনালী ষ্টোন ক্রাশারের প্রোপাইটর। গত ২৫ আগষ্ট তিনি হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ থানার পিরিজপুর গ্রামের নিজ বাড়ীতে যান। সেখানে ১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩ টার দিকে উক্ত আসামীরা আজিজুল ইলসলামকে পিরোজপুর নতুন বাজার মরাজ মিয়ার মার্কেটের সামনে তার পথরোধ করে এবং ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে মালেক বাহিনী সন্ত্রাসী গ্রুপের চাঁদাবাজরা। এ সময় সন্ত্রাসী গ্রুপ অন্ত্রের ভয় দেখিয়ে আজিজুলের সাথে থাকা ব্যবসায়ীক ২০ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

এ বিষয়টি তিনি তার পরিবারের সদস্যদের অবগত করেন। পরবর্তীতে ৩ সেপ্টেম্বর আসামী মো: শাহ আলম ফোন করে আজিজুলকে দেখা করতে বলে। পরে ভয়ে তিনি তাদের সাথে দেখা করেননি। এমতাবস্থায় গত ৯ সেপ্টেম্বর আজিজুল ইসলাম সিলেট আসার উদ্দেশ্যে নিজ বাড়ি হতে রওয়ানা হন। পিরোজপুর টমটাম স্ট্যান্ডে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীরা (সন্ত্রাসী গ্রুপ) আজিজুল ইসলামকে জোরপূর্বক অপহরণ করে একটি মাইক্রো গাড়ীতে করে চাঁনপুরহাটি সন্ত্রাসীদের আস্তানায় নিয়ে যায়। সেখানে আজিজুলের হাত পা বেঁধে মাটিকে ফেলে রাখে রাখে তারা।

এসময় সন্ত্রাসীরা তার সাথে থাকা ১৮ হাজার টাকা দামের একটি এন্ড্রুয়েড মোবাইলফোন ও মানিব্যাগে থাকা নগদ ১০ হাজার জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। তারপরেও আসামী আবু সাঈদ, শাহ আলম ও মহসিন মিয়াসহ সন্ত্রাসীরা তাদের পূর্বের দাবীকৃত চাঁদার ৫০ হাজার টাকা চায় এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকী দেয়।

তখন আজিজুল কোন উপায় না পেয়ে সন্ত্রাসীদের জানান আগে আমার হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন তারপর তোমাদের দাবীকৃত টাকার ব্যবস্থা করে দেবো। পরে সন্ত্রাসীরা তার বাঁধন খোলে দেয় এবং এই সুযোগে আজিজুল তাদের হাত হতে রক্ষার জন্য দৌড়ে পালিয়ে আসার চেষ্টাকালে মহসীন মিয়া, হৃদয় মিয়া ও শফিকুল মিয়া তাকে ঝাটটে ধরে ধারালো রামদা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে মালেক বাহিনীর সন্ত্রাসী গ্রুপ।

এ সময় আজিজুল ইসলামের শোরচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে সন্ত্রাসীদের হাত হতে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্ের নিয়ে যান। সেখানে তার অবস্থায় অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হস্তান্তর করেন।

বর্তমানে হাতপাতালের ৩য় তলার ১১নং ওয়ার্ডে মুমুর্ষ অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন পাথর ব্যবসায়ী আজিজুল ইসলাম (৩০)। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।

Development by: webnewsdesign.com