আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান এত ক্ষমতার মালিক তো দেশ ছেড়ে পালালেন কেনো

সোমবার, ২০ জানুয়ারি ২০২৫ | ১১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ডা. শফিকুর রহমান এত ক্ষমতার মালিক তো দেশ ছেড়ে পালালেন কেনো
apps

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এত ক্ষমতার মালিক তো দেশ ছেড়ে পালালেন কেনো। দেশের প্রতি যাদের ভালোবাসা আছে, দরদ আছে তারা কখনও দেশ ছেড়ে পালাতে পারেন না। ক্ষমতার দাপটে কেয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। আপনাদের পলায়ন, আপনাদের পরাজয়ই প্রমাণ করেছে সর্বময় ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বেলা ১২টার দিকে রাজশাহীর মাদরাসা মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ইজ্জত দেওয়ার মালিক আল্লাহ, ইজ্জত কেড়ে নেওয়ার মালিকও আল্লাহ। আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন, তোমরা যেন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা কর। আর তোমরা মানুষের প্রতি সম্মান দেখাও এহসান করো। এটা আল্লাহর হুকুমযারা ন্যায়বিচারের প্রতি আছে, মানুষকে সম্মান করবে এবং যারা মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করবে। আল্লাহ তাদের ইজ্জত বাড়িয়ে দেবে। আর যারা সমাজে জুলুম এবং অবিচারের প্রচলন করবে মানুষকে বেইজ্জত করবে বিশেষ করে সম্মানিত মানুষদেরকে যারা অসম্মান করবে আল্লাহ তাদের সম্মান এবং রাজত্ব দুইটাই কেড়ে নেবে। আল্লাহ বলেছেন, ক্ষমতা আমি দিই, ক্ষমতা আমি কেড়ে নিয়। ইজ্জত আমি দিই, ইজ্জত আমি কেড়ে নিই।

তিনি বলেন, আল্লাহর শক্তিতে বলিয়ান এমন একটি জাতি গঠন করতে চাই। যে জাতি আল্লাহর শক্তিতে আলোকিত হবে। সে জাতি হবে সাহসী জাতি, বীরের জাতি। এ জাতি আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করবে না। মোমিনরা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করেন না। মাথা নত করনি বলে একটানা সাড়ে পনেরো বছর আলেম-ওলামাদের ওপরে বিগত সরকার তাণ্ডব চালিয়েছে। জামাতে নায়েবে আমিরসহ ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে আমাদের বুক থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারা করেছে আমাদের শত শত নেতাকর্মীকে তারা খুন করেছে। অসংখ্য ভাই-বোনকে তারা খুন করেছে, গুম করেছে, পঙ্গু করেছে, আহত করেছে তারা। তাদের চাকরি কেড়ে নিয়ে ভিটামাটি থেকে উচ্ছেদ করেছে।

জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ১৫ বছর বর জাতি জুকুমের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। অন্যায়ের প্রতিবাদ যারাই করেছেন তাদের সরকার জুলুম অত্যাচার করেছে। গত ১৫ বছর সরকার তান্ডব চালিয়েছেন। ১১ জন দায়িত্বশীল নেতাকে তারা কেড়ে নিয়েছে। কাউকে দেশেও থাকতে দেয় নি। দফায় দফায় জেলে নিয়েছেন। তারা কী করেছেন। কিছুই করি নি। তাদের অপরাধ তাহলে কী ছিলো। অনেকে জিন্দা শহীদ হয়ে আছেন। হাত পা টুকরা টুকরা। বাকিদের মৃত্যু দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এতে আমরা ব্যথিত নই। আমরা আল্লাহর দরবারে শোকর গুজার করি।

তিনি আরও বলেন, আমরা কেন বললাম যে সমস্ত ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ তাওয়ালা। সার্বভৌমত্বের একমাত্র অধিকার, একমাত্র আল্লাহ তাওয়ালার। বিগত সরকার এই অপরাধে নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের নিবন্ধন কেড়ে নিয়েছে। তারা আল্লাহর সার্বভৌমত্ব মানে না। তারা মনে করেছিল নিজেই সার্বভৌম। সার্বভৌম মানে সর্বময় ক্ষমতার মালিক। এত ক্ষমতার মালিক তো দেশ ছেড়ে পালালেন কেন। ক্ষমতার দাপটে কিয়ামত পর্যন্ত টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। আপনাদের পলায়ন, আপনাদের পরাজয়ই প্রমাণ করেছে সর্বময়ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামীন।
কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামাতের আমির মাওলানা কেরামত আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও রাজশাহাী অঞ্চল পরিচালক অধ্যক্ষ মো. সাহাবুদ্দিন। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম. কেন্দ্রী কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, পাবনা জেলা আমীর আবু তালেব মন্ডল, চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা আমীর আবু জার গিফারি, নাটোর জেলা আমীর ড. মীর নূরুল ইসলাম. নওগাঁ জেলা আমীর খন্দকার মো. আব্দুর রাকীব, বাংলাদেশ খেলাফতে মজলিস রাজশাহী মহানগর সভাপতি মুফতি মোহাম্মদ আবুল বাশার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ রাজশাহীর আহŸায়ক মাওলানা হাবিবুর রহমান কাসেমী।

স্থানীয় নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর এডভোকেট আবু মোহাম্মদ সেলিম, রাজশাহাী জেলা জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা আব্দুল খালেক, ইসলামী ছাত্রশিবির রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, রাজশাহী মহানগর সভাপতি মো.শামীম উদ্দিন,বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক নওসাজ জামান, রাজশাহী মহানগরীর সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাহববুল আহসান বুলবুল,শ্রমিককল্যান সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সামাদ, রাজশাহী জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ নাজমুল হক জেলার শ্রমিক কল্যান সভাপতি অধ্যাপক কামরুজ্জামান, রাজশাহী মহানগরী সাংগঠনিক সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন সরকার, শিবিরের রাজশাহী জেলা পূর্ব সভপতি মো: রুবেল আলী, রাজশাহী জেলা পশ্চিমের সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেন, রাজশাহী বিভাগের উলামা সেক্রেটারি মাওলানা মো: রুহুল আমিন, রাজশাহী জেলার মাদরাসা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মাওলানা এফ এম ইসমাইল আলম, রাজশাহী মহানগর যুব বিভাগীয় সেক্রেটারি সালাহ উদ্দিন আহমেদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজশাহী জেলা আমীর অধ্যাপক আব্দুল খালেক। উদ্বোধন করেন জুলাই বিপ্লবের শহীদ সাকিব আনজুমের গর্বিত পিতা মাইনুল হক। এর আগে মাওলানা আরিফুল ইসলামের অর্থসহ কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়।

 

Development by: webnewsdesign.com